সিরাজগঞ্জ: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, শেখ হাসিনা আইন, বিচার, পুলিশ প্রশাসনসহ সব সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে।
ধ্বংস্তপ্রাপ্ত বাংলাদেশকে পুনর্জ্জীবিত করতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন। এ ৩১ দফায় জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশের সব সেক্টরে উন্নয়ন করে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করে সমৃদ্ধশালী দেশ উপহার দেবে। আগামী নির্বাচনে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এবং বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনকারী দলগুলোকে ক্ষমতায় আনতে হবে। ইনশাআল্লাহ ৩১ দফার মাধ্যমে আপনাদের আমরা আমাদের সেই জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ বেগম জিয়ার সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে পারব।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ি ইছাহাক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, শেখ মুজিবের হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের একটা অরাজকতা পরিবেশের পোড়ামাটি থেকে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলাদেশ গড়ে তুলেছিলেন। বাংলাদেশের শ্রমিকদের বিদেশে পাঠিয়েছিলেন, রেডিমেড গার্মেন্টস তৈরি হয়েছিল। বিশ্বের মানচিত্রে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছিলেন। তার সন্তান তারেক রহমান ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে আবারও একটা উন্নত দেশ বানাবেন।
পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে টুকু বলেন, হাসিনার আমলে কোনো আইনের শাসন ছিল না। বিএনপির কোনো নেতাকর্মী হামলা-খুনের শিকার হলেও মামলা নিতো না। এমনকি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রোমানা মাহমুদ বারবার হামলার শিকার হলেও কোনো মামলা নেওয়া হয়নি। আবার এখন পুলিশ বলছে, আইন মেনে সব কিছু করতে হবে। পুলিশ এমন আচরণ করলে জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী অপকর্ম, লুটপাট ও খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। বিচার থেকে কেউ রক্ষা পাবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখনো দেশে আওয়ামী লীগ রয়েছে। আপনাদের মুখরোচক কথা বলে মিলতাল দিয়ে থাকবে। কিন্তু আপনার তাদের কথায় ভুলবেন না, আওয়ামী লীগ থেকে সজাগ থাকবেন।
টুকু বলেন, আপনার নিশ্চয় দেখেছেন সরকার একটা দুর্নীতির ওপর একটা কমিটি করেছিল, সেই কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী হাসিনা যে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে ১০০ টা পদ্মা সেতু বানানো যেত। ঋণের টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের পকেট থেকে ঋণ শোধ করতে হবে যা ১০০ বছরেও শোধ হবে না।
তিনি আরও বলেন, অলরেডি শেখ হাসিনা খাজনা ট্যাক্স বাড়িয়েছেন। জিনিসপত্রের দামও বাড়াইছে। তার অর্থ সব আপনার পকেট থেকে যাবে। এ পদক্ষেপ শেখ হাসিনা নিয়েছে এবং এ বাংলাদেশকে একটা শ্মশান বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। এ দেশকে যারা শাসন করার দায়িত্ব নেবে তাদের জন্য অনেক কঠিন হবে এটা করার জন্যই শেখ হাসিনা এ কাজ করেছে। এ কাজ করে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলে আওয়ামী লীগকে ফেলে দিল্লি চলে গেছে । এখন দিল্লি বসে চিন্তা করছে দিল্লি বোধহয় আবার তাকে বাংলাদেশের মসনদে বসিয়ে দেবে। স্বপ্ন দেখাটা ভালো কিন্তু দুঃস্বপ্ন দেখাটা ভালো না।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, আমি টুকু মাথানত করতে জানি না মাথা নত করিনি। হাসিনা আমাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছিল। আমি সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলাম এ হাসিনার এ অবিচার মানি না আর এ অবিচার মেনে হাসিনার কাছে নত করব না।
কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতি জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রোমানা মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক ভিপি শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ সুইট, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস ও যুবদলের সভাপতি মির্জা বাবু।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
জেএইচ