ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

কয়রায় আ.লীগের ৭৬ নেতা-কর্মীর নামে হত্যাচেষ্টা মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
কয়রায় আ.লীগের ৭৬ নেতা-কর্মীর নামে হত্যাচেষ্টা মামলা

খুলনা: ১২ বছর আগের ঘটনায় খুলনার কয়রায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ ৭৬ জনের নামে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কয়রা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন ফারুক শেখ (৫৭)।

 

তিনি উপজেলার ৫ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় একজন জেলে। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব‌্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক মো. আজহারুল ইসলাম।

মামলার নম্বর সিআর ৬৭/২৫। মামলায় ৭৬ জন নামীয় ব‌্যক্তিসহ ৬০-৭০ জন অজ্ঞাতনামা ব‌্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীসহ তাদের অনুসারী আইনজীবী, শিক্ষক ও সংবাদকর্মী রয়েছেন।  

অন‌্যতম আসামিরা হলেন- কয়রা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম‌্যান এসএম শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম‌্যান এসএম বাহারুল ইসলাম, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম‌্যান নুরুল ইসলাম সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম‌্যান আব্দুস সাত্তার পাড়, সাধারণ সম্পাদক নিশীত রঞ্জন মিস্ত্রী, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম‌্যান কমলেশ কুমার সানা, সাবেক ইউপি চেয়ারম‌্যান আমির আলী গাইন, কবি শামসুর রহমান, আইনজীবী কেরামত আলী, এসএম আ. রাজ্জাক সানা, মোশারফ হোসেন, আরাফাত হোসেন, কয়রা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এসএম হারুণ-অর-রশিদ, কোষাধ‌্যক্ষ শাহজাহান সিরাজ, ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম টিংকু প্রমুখ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কয়রার দেউলিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা মাধ‌্যমিক বিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছালে বাদী জামায়াতের ব্যানারে একটি মিছিল আসতে দেখতে পান। কয়রা মহিলা কলেজের দিক থেকে আসা শান্তিপূর্ণ মিছিলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এসএম শফিকুল ইসলাম ও এসএস বাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারাসহ তাদের অনুসারী আনুমানিক দেড়শ জন মানুষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের অতর্কিত হামলায় ও মুহুর্মুহু গুলি থেকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে মিছিলরত জনতা এদিক-ওদিক ছুটে পালাতে থাকে।  ওই সময় তিনিও প্রাণ ভয়ে একটি দোকানের আড়ালে আশ্রয় নেন। তবে আসামিরা দেখে জামাত-শিবিরের কর্মী মনে করে ধরধর বলে ওঠে এবং বাদীকে হত্যার উদ্দেশে গুলি ছোঁড়ে। একটি বুলেট বাদীর কোমরের নিচে লেগে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে পেটের নাভির পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে পেটের নাড়ি বের হয়ে য‌ায় এবং বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে গুলির আওয়াজ কম হলে আনুমানিক বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয় জনতা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদীর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। তবে মৃত প্রায় বাদীকে জায়গীরমহল হাসপাতালে ভর্তি করতে বাধাগ্রস্ত করে আসামিরা। পরে গোপন জায়গায় চিকিৎসা নেন। একপর্যায়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন।

মামলার বাদী ফারুক শেখ বলেন, তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রতিকূল থাকায় মামলা করতে পারিনি। বর্তমানে অনুকূল পরিবেশে ন্যায়বিচার পাবে বলে আশা করছি।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে। আগামী ২০ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি। আশা করি ন্যায় বিচার পাব।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এমআরএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।