সিলেট মুরারিচাদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান রিয়াদ নামে এক ছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা বলেছে, ঘটনাটির সঙ্গে শিবির জড়িত নয়, তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেন, এমসি কলেজে গতকাল কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হয়। ২৪-এর ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে শহিদ রুদ্র সেনের নামে সেখানে ছাত্রশিবিরের একটি প্রকাশনা স্টল রয়েছে। ছাত্রশিবিরের কলেজ নেতারা গতকাল সারা দিন ও মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের এ আয়োজন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন কর্মী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া কর্মীর মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা নেই।
তারা বলেন, তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি, যে ব্যক্তি আহত অবস্থায় ছাত্রশিবিরের ওপর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, পূর্ব থেকেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে সহযোগিতা ও তথ্য সরবরাহের ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে কলেজ হোস্টেলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী তার সঙ্গে আলাপের জন্য হোস্টেলের নির্দিষ্ট ব্লকে তার রুমে গেলে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে আঘাতের ঘটনা ঘটে দুজন আহত হয়। কিন্তু এ ঘটনাকে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ছাত্রশিবির থেকে অভিযোগ করা হয় , যেহেতু ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক ও সৃজনশীল কর্মসূচি নিয়ে অনেকেরই গাত্রদাহ রয়েছে এবং সুযোগ পেলেই যারা ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপাতে চায়, তাদের একটা অংশ এ ঘটনার সম্পূর্ণ দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপাতে তৎপর রয়েছে। আমরা আরও দেখছি, সিলেটের আঞ্চলিক একটি পীরতান্ত্রিক দল, যারা বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল, তারাও ফ্যাসিবাদের সময়ে করা তাদের অপকর্মের দায় ঢাকার জন্য ছাত্রশিবিরকে অভিযুক্ত করে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, যা মূলত ফ্যাসিবাদের পারপাসই সার্ভ করে।
সংগঠনটির নেতারা এ ঘটনার সুস্পষ্ট প্রশাসনিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান এবং যে সকল মিডিয়া তথ্য-প্রমাণাদি ব্যতিরেকে বিভ্রান্তিকর নিউজ প্রচার করেছে, তাদেরকে প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরে ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদটি যথাস্থানে ছাপানোর আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আহত রিয়াদ কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ছাত্রাবাসের ১নং ব্লকের ১০১ নং কক্ষের থাকতেন। এমসি কলেজ তালামীযের (বাংলাদেশ আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়া) সহ-তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন রিয়াদ।
আহত ছাত্রের অভিযোগ, এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জওহর লুকমান মুন্নার নেতৃত্বে ১০-১২ জন তার কক্ষে প্রবেশ করে তাকে লাথি মেরে রিয়াদকে বিছানা থেকে ফেলে দেয়। এরপর দরজা লাগিয়ে রিয়াদকে রড দিয়ে বেধড়ক পেটান তারা।
কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় ফেসবুকে মন্তব্য করা নিয়ে তার ওপর এ হামলা করা হয় প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর থেকে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। ঘটনা খতিয়ে দেখতে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে।
আরও নিউজ>> এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ শিবিরের বিরুদ্ধে
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫
এসএএইচ