ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারে ঘাপটি মেরে থাকা একটি ষড়যন্ত্রী মহল নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে—এমন কথা বলেছেন বিএনপির নেতারা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রদলের কোরান তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিব উন নবী সোহেল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশচন্দ্র রায় সাহস প্রমুখ।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান বলেন, আজ বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার হয়েছে। সামনে নির্বাচন সংস্কার কাজ শেষ। যে সংস্কারের অনেকগুলোর কথা তারেক রহমান আগেই বলেছিলেন। দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। ১৬ বছর যারা আন্দোলন করেছেন তাদের নিয়ে জাতীয় সরকারের কথা তিনি বলেছেন।
আমান আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ছাত্রদল অকাতরে জীবন দিতে প্রস্তুতি নেবে। নবী করিম (সা.) অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি পিছিয়ে যাননি। আজ ছাত্রদল পেছাবে না। নবী করিম (সা.) হিলফুল ফুজুল সংগঠন করেছিলেন। প্রয়োজনে ছাত্রদলকে এই কর্মসূচি চালু রাখতে হিলফুল ফুজুল গঠন করতে হবে।
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেল বলেন, একটি মহল বলে বেড়ায়, একই সাপের দুই মুখ; একটি আওয়ামী লীগ এবং অন্যটি বিএনপি। যারা এই কথা বলে তাদের বলব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেখুন, ছাত্রলীগ কী করেছে, এখন ছাত্রদল কী করছে। আমরা সবাই মিলে একসাথে থাকতে চাই, যেন দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা যায়। কিন্তু অনেকের তো মুখ দেখি ঠিক থাকে না। সুযোগ পেলেই বিএনপিকে গুতা মারে।
বিএনপির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভাত ও ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে। ভোটের অধিকার ফিরে পেতে হাজার হাজার নেতাকর্মী-ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। লাখো নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে বিদেয় করেছি। শেখ হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু তার ফ্যাসিস্ট বাহিনী রয়ে গেছে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট বাহিনীর লোকজন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একটি ষড়যন্ত্রী মহল নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে।
দীঘদিন জনগণ ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে ইচ্ছা তাকে দেব’, এই মোটোকে ধারণ করে আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি, তখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে রয়েছে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যেও রয়েছে। তারা বিভিন্নভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে। এখন কীভাবে একজন শিশু বাচ্চা ধর্ষিত হয়? আমরা যদি বিচ্ছিন্ন থাকি, তাহলে ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে। ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে আবার কোনো স্বৈরাচারের আবির্ভাব ঘটাবে। সেজন্য সকলকে সাবধান থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
এফএইচ/এমজেএফ