ঢাকা, সোমবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩২, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৭

রাজনীতি

ফ্লাইওভার-উড়ালসেতু নয়, মেধা-প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড: রিজভী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩০, অক্টোবর ৫, ২০২৫
ফ্লাইওভার-উড়ালসেতু নয়, মেধা-প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড: রিজভী বক্তব্য রাখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ফ্লাইওভার-উড়ালসেতুর মতো লোক দেখানো উন্নয়ন দিয়ে জাতির ভিত্তি তৈরি হয় না মন্তব্য করে  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, একটি জাতির মেরুদণ্ড হলো তার শিক্ষা।

তিনি বলেন, দেশের তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা অবিশ্বাস্য।

রেসিং কার তৈরি করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাওয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থীদের এই অর্জন গোটা জাতির জন্য এক মহিমান্বিত গৌরব। সুযোগ পেলে বাংলাদেশের তরুণরাও অসাধ্য সাধন করতে পারে।

রোববার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আইইউটির রেসিং কার নির্মাতা গবেষক দলকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মেধাভিত্তিক বৃত্তি ও উৎসাহ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এই কথা বলেন।

মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের এই কাজ চারটেখানি কথা নয় উল্লেখ করে রিজভী আহমেদ বলেন, বিশেষ করে যখন তারা চীনের মত প্রযুক্তিতে উন্নত একটি দেশে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাচ্ছে, এটা শুনলেই আমাদের অত্যন্ত ভালো লাগে, আনন্দ লাগে যে আমরাও পারি। আমরা যদি একটু সুযোগ পাই, তাহলে আমাদের ছেলেরাও অসাধ্য সাধন করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, শুধু আইইউটি নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অষ্টম শ্রেণির রুমন ও মিথুন নামের দুই স্কুল ছাত্রের মঙ্গল গ্রহে প্লান্টেশন ও ভেজিটেশন নিয়ে গবেষণার কথা শুনেও আমরা হতবাক ও মুগ্ধ হই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই বিএনপি পরিবার ছুটে গিয়েছিল সেই ছাত্রদের উৎসাহ দিতে।

দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে যেখানে শিক্ষার মান উন্নত নয় এবং অবকাঠামোগত দিক আশেপাশের দেশের তুলনায় দুর্বল, সেখানে রেসিং কার বা উচ্চ-প্রযুক্তির গবেষণা করা অত্যন্ত কঠিন। দেশে দীর্ঘদিন ধরে উপযুক্ত শিক্ষা কার্যক্রমকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রায় ৪০ শতাংশ বিদ্যালয়ে কোনো ধরনের প্রযুক্তি-নির্ভর শিক্ষা কার্যক্রম নেই, যা গ্রামীণ অঞ্চলে আরও তীব্র।  

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, যদি শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হতো, সত্যিকার অর্থেই প্রযুক্তি-নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যেত এবং শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, তবে দেশ অনেক জেমস মেডিসন বা মাইকেল ফ্যারাডের মতো বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ পেত।

তিনি বলেন, একটি জাতির মেরুদণ্ড হলো তার শিক্ষা, আর ফ্লাইওভার-উড়ালসেতুর মতো লোক দেখানো উন্নয়ন দিয়ে জাতির ভিত্তি তৈরি হয় না।

বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে জ্ঞানচর্চা ও বিজ্ঞানচর্চার কোনো সুযোগ না থাকায় আজ মাস্তান তৈরি হচ্ছে, গুন্ডা তৈরি হচ্ছে। আজ পত্রিকায় দেখলাম তেজগাঁও কলেজের ছাত্রলীগের এক নেতা দেশের প্রধান উপদেষ্টাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে, সৈয়দপুর বসে। যদি সত্যিকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা থাকত, তাহলে এমন পরিস্থিতি হতো না।

রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অত্যন্ত গভীর অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে দেশের তরুণদের এই প্রতিভাগুলো অনুসন্ধান করছেন এবং তাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। প্রথম পাতায় না আসা এই খবরগুলোও তার (তারেক রহমান) দৃষ্টি এড়ায় না।

সবশেষে রিজভী আহমেদ আইইউটির শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন ও অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান।

ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।