ঢাকা: খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস হওয়ার কথা আনন্দের। কিন্তু তিনি এক কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আছেন ‘আরেক কারাগারে’।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অষ্টম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস পালন করছি। এই কারামুক্তি বলতে লজ্জা লাগে। কারামুক্তি বলার দরকার নেই, দেশটাই আজ কারাগার হয়ে আছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যতোদিন পর্যন্ত ‘স্বৈরাচার’ বিরাজ করবে ততোদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া লড়াই করে যাবেন। গণতন্ত্র উদ্ধার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়া তার সৃজনশীল রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে সামনে এগিয়ে যাবেন।
এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশ এমন একটি অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, এদেশে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও কথা বলার স্বাধীনতা নেই।
টিউশন ফি-এ ভ্যাটের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে যে ভ্যাট বসানো হয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। বাড়তি এই অর্থ আদায় করার কারণে ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজ খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবস। আট বছর আগে এক কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে এখন আছেন আরেক কারাগারে। বর্তমান এই কারাগারে তার সঙ্গে আছেন ১৬ কোটি মানুষ।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আবার ঊর্ধ্বতন কারাগারে প্রবেশ করানোর জন্য চেষ্টা করছে সরকার। মনে হয় মামলার রায় আগেই নির্ধারিত। অতি তাড়াতাড়ি রায় ঘোষণা করতে চাইছে তারা। এরপর রয়েছে উচ্চ আদালত। কিন্তু তারপরও রয়েছে জনতার আদালত।
সেই আদালতে প্রকৃত বিচার হবে বলে মন্তব্য করেন স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নেত্রীর কারামুক্তির দিবস তো আনন্দের দিবস। কিন্তু আজ তা না। সারাদেশ কারাগারের মধ্যে, যিনি বেশি সহ্য করছেন তিনি খালেদা জিয়া।
সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল লোকেরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণের টাকার একদিন হিসেব দিতে হবে। আমি হয়তো থাকবো না। এই দেশের এই দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা লুটপাটের হিসেব কড়ায়-গণ্ডায় দিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়াকে রক্ষা করা না গেলে বিএনপিকে রক্ষা করা যাবে না। বিএনপিকে রক্ষা করা না গেলে যতোটুকু বাংলাদেশ আছে তাও থাকবে না, এ দেশের কোনো মানুষ বিচার পাবে না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ‘মিথ্যা মামলায়’ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকবেন, আর নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াবেন, আত্মগোপনে থাকবেন, এটা মানা যায় না। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের জেগে ওঠার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদীন, বিএনপিপন্থি শিক্ষক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫
টিএইচ/জেডএস/এএসআর