ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রদের আন্দোলন

সংকটে পরিণত হওয়ার আগে মীমাংসার আহ্বান সুরঞ্জিতের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
সংকটে পরিণত হওয়ার আগে মীমাংসার আহ্বান সুরঞ্জিতের সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছেন, সমস্যা সংকটে পরিণত হওয়ার আগে এর সমাধান করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।


 
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
 
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে দুই একটি বাদে বাকি গুলোতে কি পড়ায় সে নিয়ে তো প্রশ্ন আছেই। তাছাড়া ইউনিভার্সিটি করতে হলে অন্তত একটা ক্যাম্পাস তো থাকতে হয়, অনেকগুলোর সেগুলোও নেই। কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে ভাইস চ্যান্সেলর করে চালিয়ে দেয়া হয়।
 
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে আরো তীক্ষ্ণ নজরদারির কথা বলেন তিনি।

ছাত্রদের উপর অর্পিত ভ্যাট পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি আগেও বলেছি বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করা দরকার। তবে এটিও দেখতে হবে ছাত্ররা যেভাবে রাস্তায় নেমে গেছে এটাও ঠিক না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আজ যেভাবে ছাত্রদের নামাইয়া দিয়েছেন, এর পেছনেরটাও দেখতে হবে। আজ যদি অনুমোদন বাতিল করে দেয়, তাহলে কোথায় যাবেন। ’

শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষামন্ত্রী যেসব ‘হলিস্টিক’ কথা বলছেন এটা ঠিক না।

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিলেন কেন, আর দিলেনই যদি তাহলে এগুলো চলে না কেনো?’

সুরঞ্জিত বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নন প্রফিট বলা হয়, আসলে কি এটা নন প্রফিটেবল? এখানে বিনিয়োগ করে কারা ? ব্যবসায়ীরা, গার্মেন্টসের চাইতে বেশি প্রফিটেবল বলে অনেকেই গার্মেন্টস ব্যবসা বন্ধ করে এখানে বিনিয়োগ করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক পক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আপনি নন প্রফিট বলে প্রফিট করে নিবেন আর সরকারকে কিছু দেবেন না তা তো হয় না। তবে যাই হোক সমস্যা সংকটে পরিণত হওয়ার আগে মীমাংসা করতে হবে।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়ে বলেন, দেশের উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের মামলা জট কমানোর জন্য নানাবিধ উদ্যোগের কথা আইন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কমিটিকে অবহিত করেছি। আইন মন্ত্রণালয় স্বল্প মেয়াদী, মধ্য মেয়াদী, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার রিপোর্ট দিয়েছে। তারা (আইন মন্ত্রণালয়) বলেছে দ্রুত ৫০০ বিচারক নিয়োগ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করেছে। তবে কমিটি মনে করে ৫০০ নয়, ৫০০০ বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত দক্ষ, নিষ্ঠাবান, সৎ বিচারকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমানে দেড় লাখে একজন বিচারক রয়েছে। এইটা অন্তত লাখে ১ জন করা যায় কিনা সেটা ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, দেশের বড় সমস্যা মামলা জট। এই মামলা জট না কমাতে পারলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। একই সাথে দেশের উন্নয়ন ও মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হওয়ার পথও মসৃণ হবে না।
 
সুরঞ্জিত বলেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ন্যায় বিচার যেন বিঘ্ন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে বলেন, আজ বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। একচুল পরিমাণও কেউ হস্তক্ষেপ করে না। তবে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের মামলা কেন বিচার বিভাগ এড়িয়ে গেল। যেখানে সংবিধানেই আছে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে রিমান্ডে নেওয়া যাবে না। সেখানে আপনি রিমান্ডে নিলেন কেনো?

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
আরআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।