সোমবার (০২ জানুয়ারি ) রাতে হলের পদ্মা ব্লকের ১০০০৭ (দশ হাজার সাত) নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং এর জের ধরে মারপিটের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী।
আহত শিক্ষার্থী হলেন, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইউসুফ ভূঁইয়া নিরব। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদারের সঙ্গে রাজনীতি করেন।
সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন। হামলায় নিরবের শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলে যায়। এসময় ঘটনার বিষয়ে তিনি জানান, সোমবার সকালে হলের শিক্ষার্থীদের মধুর ক্যান্টিনে ডাকে শাখা ছাত্রলীগ। সেখানে দুপুর পর্যন্ত অবস্থানের পর হলে ফিরলে শাখা সভাপতি ফকির রাসেল নিরবকে তার কক্ষে ডাকেন এবং তার সঙ্গে রাজনীতি করতে বলেন। এতে অসম্মতি জানালে ফকির রাসেল তাকে ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দেন।
পরে রাত নয়টার দিকে ১০০০৭ (দশ হাজার সাত) নং কক্ষে নিরব যখন অবস্থান করছিলেন তখন ১০-১৫ জন সশস্ত্র ছাত্রলীগ কর্মী গিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। রড, লাঠি ও ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্পসহ এ হামলায় অংশ নেন ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের তানভীর, মনোবিজ্ঞানের হিমু ও রণ, ইসলাম শিক্ষার সাদিয়ার ও সাকিব, পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজের তামিম, শিক্ষা ও গবেষণার প্রান্ত, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসের ইমন, সঙ্গীতের আরিফ, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ফারুক। এদের সবাই শাখা সভাপতি ফকির রাসেলের অনুসারী ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. জামেল আহমেদ শাহেদী বাংলানিউজকে বলেন, তার শরীরের হাত ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এক্সরে করা হবে। ২৪ ঘণ্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে শাখা সভাপতি ফকির রাসেল বাংলানিউজকে বলেন, হলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। একজন মারধরের শিকার হয়েছে বলে শুনেছি। তবে নিশ্চিতভাবে সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, মারধর করে একজনকে আহত করা হয়েছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো। তারা ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবে না।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাক- ছাড় পাবেনা। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে একাডেমিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বিশৃঙ্খলা যেই করুক ছাড় দেয়া হবে না। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ কঠোর হস্তে দমন করা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটা আমি শুনেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে তানভীরকে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছিল। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৭
এসকেবি/বিএস