ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পিত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৮
‘অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পিত’ বকশীবাজার বিশেষ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন/ছবি: বাদল

ঢাকা: ‘যে নথি-পত্রের উপর ভিত্তি করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা হয়েছে তা মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পিত'। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে এমন কথা বলেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। 

তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ জাল নথি তৈরি করেছেন, আর এই জাল নথির সপক্ষে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন হারুন অর রশিদসহ ৫ সাক্ষী।

রুলস অব বিজনেস মেনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিটি ডকুমেন্ট নিয়ম অনুযায়ী স্বাক্ষর ও সংরক্ষিত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নিরাপত্তা কি এতোই দুর্বল যে সেখানকার ডকুমেন্ট অন্য দফতরে যাবে। অথচ সেই দফতরের কর্মকর্তারা কিছুই বলতে পারবে না। এখানে যে ডকুমেন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে তা ব্যতিক্রম। এখানে ঘষামাজা আছে। একটি চেকেও কোনো স্বাক্ষর নেই।

তিনি আরো বলেন, সবাই মিলে বসে এই নথি বানানো হয়েছে। এটা দুদকের বানানো নথি। এমনকি সাক্ষীদেরও শেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে,  তাদের দিয়ে এটা করানো হয়েছে। খালেদাকে ফাঁসাতেই এই নথি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (০৩ জানুয়ারি) মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, মিথ্যা বানোয়াট তথ্যের উপর ঘষামাজা করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুতরাং এ মামলায় সাজা হতে পারে না। আমরা আশা করছি খালেদা জিয়া জামিন পাবেন।

১৯৯৩ সালের মামলা ২০০৮ সালে নতুন করে সৃজন করা হয়েছে। তারা যে কাগজগুলোতে ডকুমেন্ট লিখেছে তা রাষ্ট্রপতির দফতরের। অথচ ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থা দেশে আর নাই।

যে নথির উপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়ার নামে মামলা হয়েছে। তা ভিত্তিহীন, ফ্রট। তারা বলেছে যে, মামলার মূল নথি পাওয়া যায়নি। জাল,  মিথ্যা দলিল তৈরি করে তার উপর ঘষামাজা করে মামলা দেয়া হয়েছে।  

নকল করে, জালিয়াতি করে যারা মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা আদালতে দরখাস্ত করবো।  

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, হারুন সাহেবও চাকরি করেন নাই, আমিও করি নাই। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যারা চাকরি করতো তারাই এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে।  

যারা নথি তৈরি করেছে, তারা ১৯৯১ থেকে ৯৬ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন।  

আমরা স্বীকার করেছি যে নথির উপর ঘষামাজা আছে। রাষ্ট্রপতির জায়গায় প্রধানমন্ত্রী লিখেছে। কারণ তখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতির দফতরের কাগজ ব্যবহার হতো।

৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যর উপর ভিত্তি করে আমরা মামলা করেছি। কিন্তু আইনজীবীরা তো কৌশলী হয়, তাই তারা মামলাটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য 'সৃজন' কথাটা বলছে। তার বলছে যে, মামলা সৃজিত করা হয়েছে।  

এর আগে সকাল ১১টায় গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হয়ে ১১টা ৪০মিনিটে বকশীবাজার বিশেষ আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন।

এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে ষষ্ঠ দিনের মত অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

**আদালতে খালেদা জিয়া
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩
এএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।