তিনি বলেছেন, যদি আওয়ামী লীগ আবারও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পথে হাঁটে, তবে জনগণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনার সরকারকে প্রতিহত করবে এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জিয়া পরিষদ আয়োজিত ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র: শহীদ জিয়াউর রহমান ও আজকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন খন্দকার মোশাররফ।
বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশের আসল অবস্থা সরকার জানে। তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত রিপোর্টে এসেছে যে, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ৩০-৪০ এর বেশি আসন পাবে না। সংস্থাগুলো এও বলেছে যে, দিন যতই যাবে, এই সংখ্যা তত কমতে থাকবে।
সরকার (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) জিয়াউর রহমান, (চেয়ারপারসন) খালেদা জিয়া এবং তার পরিবারকে ভয় পায় দাবি করে ড. খন্দরকার মোশাররফ বলেন, জিয়া পরিবারকে ভয় পায় বলেই সরকার খালেদা জিয়াকে আদালতের বারান্দায় ঘুরাচ্ছে। জিয়া পরিবারকে হেয় করছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পর্যন্ত হামলা-মামলা দিচ্ছে।
খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে ৫ জানুয়ারির মত ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনের ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র সফল হবে না। এবার হবে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন।
ড. মোশাররফ বলেন, আমরা একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এজন্য আমাদের নেত্রী দেড় বছর আগে ঘোষণা দিয়ে বলেছেন যে, নির্বাচনকালীন একটা নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে। সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিতে হবে। ৫ জানুয়ারি জাতীয় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে জনগণের ভোটের প্রতি যে অনীহা-অনাস্থা তৈরি হয়েছে, সেই আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট দিনের জন্য মোতায়েন করতে হবে। আমাদের নেত্রী আরও বলেছেন যে, নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা তিনি (খালেদা জিয়া) দেবেন। এটা আমি এখনো বলছি যে, আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং উপযুক্ত সময়ে এই রূপরেখা দেওয়া হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নাকি তিনটা সরকারের কথা বলে। আমরা তিনটা সরকারের কথা কখনো বলিনি। আমরা সবসময় বলছি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। যেই সরকার নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনকালীন সময়ে সহায়তা করবে, একটি সুষ্ঠু নিরর্বাচন পরিচালনার জন্য। একটি সহায়ক সরকার হতে পারে। এটা নাম নয়, এটা সহায়তার জন্য সরকার। এটা হবে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার’।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন ‘নির্বাচনকালীন সরকার’র কথা। বর্তমান সংবিধানে কিন্তু সেই নির্বাচনকালীন সরকারের কথা নেই। প্রধানমন্ত্রী যদি আন্তরিক হয়ে থাকেন, তাহলে তার সেই কথা ধরে যদি বলি নির্বাচনকালীন সরকার হবে, তাহলে সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে। আজকে সংসদে আওয়ামী লীগের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য আছে, তারা চাইলে সংশোধনী আনতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘নির্বাচনকালীন সরকার’, সংশোধনীতে অবশ্যই থাকতে হবে ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার’।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে এবং পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুল্লাহিল মাসুদের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. এসএম হাসান তালুকদার, বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এএম/এইচএ/