বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন ফখরুল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চ।
ফখরুল বলেন, গতকাল (বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি) সংসদে বিএনপিকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপিকে দুর্নীতিপরায়ণ বলার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখতে হবে। অন্যকে বলার আগে মানুষ আপনাদের সম্পর্কে কী বলে, সেটা জানতে হবে।
জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তৃতায় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর সাজা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে টাকা আসে, কিন্তু সেই টাকা এতিমরা পায়নি। সেই টাকা তিনি (খালেদা জিয়া) আত্মসাৎ করেছেন। ...যে দল দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করে, দুর্নীতিবাজকে নেতা হিসেবে মেনে নেয়, সেই দল ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি ছাড়া আর কী করবে?’
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, যারা পাঁচবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে জনগণের ভোটে, যারা সবসময় জনগণের সঙ্গে থেকেছে, বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে, সেই দলকে তিনি বলেছেন, দুর্নীতিপরায়ণ দল। দেশের মানুষ ভালো করে জানে কারা দুর্নীতি করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়ার নামে ছিল চারটি মামলা আর প্রধানমন্ত্রীর নামে ছিল ১৫টি মামলা। ওই চারটি মামলা রেখে ১৫টি মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে ৭৮ হাজার মামলা দেওয়া হয়েছে এবং ১৮ লাখ নেতাকর্মীর নামে এসব মামলা হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীতে কারাগারগুলো ভরে গেছে। কেন করছেন এটা? কারণ, আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাইরে থাকলে, মাঠে থাকলে, জনগণের সঙ্গে থাকলে আগামী নির্বাচনেও আর কোনো আশা নেই। সেজন্য আপনারা বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছেন। জোর করে যেন আবারও ক্ষমতায় যেতে পারেন।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার আগে দেশে অঘোষিত কারফিউ জারি করা হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সমস্ত দোকান-পাট বন্ধ করেছিল। বাস-লঞ্চ পর্যন্ত বন্ধ করে রেখেছিল। গত ১০ বছর ধরে দেখে আসছি, যখনই আমরা কোনো সভা-সমাবেশ করতে যাই, তখনই সবকিছু বন্ধ করে দেয়। যেন নেতাকর্মীরা আসতে না পারে।
বর্তমান সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে না দাবি করে তিনি বলেন, সম্প্রতি তাদের বিরোধী দলের নেত্রী সংসদে বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী, আমাদেরকে বাঁচান, আমরা কি সরকারি দল নাকি বিরোধী দল?
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস তার বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনিও ভালো থাকেন, দেশের মানুষকেও ভালো থাকতে দিন। কেন খামোখা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন? একটা কথা মনে রাখবেন, কাউকে গলা পানিতে নামিয়ে দিতে হলে নিজেকেও গলা পানিতে নামতে হয়।
জাতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার মঞ্চের সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমত উল্লাহ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
এএম/এইচএ/