রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময় কারাবরণ করলেও কোনো মামলায় এবারই প্রথম সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া। বিদেশ থেকে এতিমদের জন্য জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
রায় ঘোষণার পরই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে এখানেই সাজা ভোগ করতে হচ্ছে বিএনপি নেত্রীকে।
বর্তমানে সাজা ভোগ করলেও কারাভোগ কিন্তু এটিই প্রথম নয় খালেদা জিয়ার। সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। সেসময় তার মইনুল হোসেন রোডের বাড়িটিকে সাব-জেল ঘোষণা দিয়ে সেখানে তাকে আটক রাখা হয়। এক বছর নয় দিন বন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ছাড়া পান খালেদা জিয়া।
এর আগেও কারাভোগ করেন তিনি। স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৮৭ সালে গ্রেফতার হয়ে হয়ে কারাভোগ করেছিলেন বিএনপি নেত্রী।
৮ ফেব্রুয়ারি খালেদার কারাদণ্ড ঘোষিত হওয়ার পরই বিএনপি প্রধানের আইনজীবীরা হাইকোর্টে আপিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান সাংবাদিকদের। এরমধ্যে তাকে কারাগারে ডিভিশন (সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী প্রাপ্য মর্যাদা) সুবিধা দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে এই সুবিধা নিশ্চিতে দৌড়ঝাঁপ করেন বিএনপির আইনজীবীরা।
পরে খালেদা জিয়াকে ডিভিশন দেওয়ার পর তার জামিন আবেদনের ওপর মনোনিবেশ করেন তার আইনজীবীরা। কিন্তু রায়ের অনুলিপি বা কপি না পাওয়ায় জামিন আবেদনের শুনানি বিলম্বিত হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি হাইকোর্টে পৌঁছায়। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে জামিন শুনানি করেন খালেদার আইনজীবীরা।
তখন আদালত জানান, বিচারিক আদালতের নথি হাইকোর্টে পৌঁছানোর পর জামিনের আবেদনের ওপর আদেশ দেওয়া হবে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আগামী রোববার (১১ মার্চ) খালেদা জিয়ার সাজার নথি হাইকোর্ট পৌঁছাতে পারে।
বিএনপির আইনজীবীরা আশা করছেন, খালেদা জিয়ার জামিন হয়ে যাবে। যদিও মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীরা এরইমধ্যে বলেছেন, খালেদার জামিন আবেদনের পক্ষের যুক্তির বিরুদ্ধে সব উত্তর তৈরি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
এমআই/এইচএ/