ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সংসদ নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৮
সংসদ নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ নেই নির্বাচন কমিশনে ব্রিফ করছেন মওদুদ আহমদ

ঢাকা: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ নেই দাবি করেছে বিএনপি। এ অবস্থায় পুলিশি হয়রানি বন্ধকরণ, প্রশাসনে রদবদল, গ্রেতফাতদের মুক্তির ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানিয়েছে দলটি।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে শনিবার (০১ ডিসেম্বর) বিকেলে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একথা বলেন।  

বিকেল ৩টায় নির্বাচন ভবনের কনফারেন্সে বৈঠকটি শুরু হয়।

প্রায় আড়াই ঘণ্টা তারা বৈঠক করেন। বৈঠকে ৬ দফার একটি লিখিত দাবিও উপস্থাপন করে বিএনপির সাত সদস্যেরর প্রতিনিধি দল।

মওদুদ আহমদ বলেন, সারাদেশে এমপি মন্ত্রীরা পদত্যাগ না করে প্রার্থী হওয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে- এমন বলার ন্যূনতম সুযোগ নেই। প্রতিদিন রাতের বেলায় অভিযানের নামে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আটক করছে। পুলিশি হয়রানির কারণে তারা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। ৯১, ৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে নির্বাচনকালীন প্রশাসনের রদবদল করা হলেও এবার তা না করায় সরকারের আনুগত্য প্রশাসন নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কোনো ভাবেই সম্ভব না।  

তিনি বলেন, ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসিদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু তারা সরকারের আনুগত্য বলেই তাদের এসব পদে সরকার নিয়োগ দিয়েছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের স্বাভাবিক কারণেই বদলি করা হলে এতে করে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। তাদের মনে হবে এবার বুঝি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এ পরিবেশ যদি সৃষ্টি না হয়, তাহলে নির্বাচন একটি দুরূহ ব্যাপারে পরিণত হবে।  

তিনি বলেন, সারা দেশে যেভাবে পুলিশি অভিযানের নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে এ অবস্থা বন্ধ না হলে নির্বাচনের ন্যূনতম সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না। এজন্য প্রয়োজন ডিসি, এসপি, ইউএনও ওসিদের বদলি করা হলে কিছুটা হলেও পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এটা করা না হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। আমরা চাই না নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হোক।  

তিনি বলেন, এ নির্বাচন জাতির জন্য শেষ পরীক্ষা। একেবারেই শেষ পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় যদি আমরা উত্তীর্ণ না হই, তাহলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আনতে পারব বলে মনে হয় না। আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করবেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে দাবি মেনে নিবেন।  

সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু পরিবেশের ন্যূনতম কোনো পরিবেশ নেই। সরকার যেভাবে চাচ্ছে প্রশাসন সেইভাবে নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। নির্বাচন কমিশন তা রোধ করছে পারছেন না। এ পর্যন্ত আমাদের ৭ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে পুলিশ আটক করেছে। তাদের জামিন হচ্ছে না। বিচারিক আদালত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সরকারের সাজানো পুলিশ প্রশাসন, সিভিল প্রশাসন দলীয় ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। উচ্চ আদালত বিভিন্ন সময়ে জামিন দিলেও বিচারকি আদালত নানা অজুহাতে তা আটকে রাখছে। এসব বিষযে প্রতিকার চেয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কমিশন বক্তব্য আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তারা এব্যাপারে ইসি প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা ছাড়াও, নির্বাচন কমিশন কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাস, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, মুশফিকুর রহমান ও বিজন কান্তি সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
ইইউডি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।