ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপিপ্রার্থী হাবিবকে কুপিয়ে জখম

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮
বিএনপিপ্রার্থী হাবিবকে কুপিয়ে জখম হাবিবুর রহমান হাবিব

ঈশ্বরদী (পাবনা): পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী) আসনের বিএনপির প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে হামলায় বিএনপির আরও চার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে একটি প্রাইভেটকার।

আহতরা হলেন- আহসানুল ইসলাম রিপন, বাচ্চু, সরদার আতাউর রহমান ও বীর হোসেন।

বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টায় ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসংযোগ চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বিএনপি নেতা সরদার আতাউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পাবনা-৪ আসনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বাধীন বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ঈশ্বরদী শহরের আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসংযোগের জন্য জমায়েত হন। এসমায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সেখানে অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে হাবিবকে কুপিয়ে জখম করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যায়। ’

হাবিবের ছোট ভাই ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, ‘শহরের কয়েকটি স্থানে জনসংযোগ করা কথা ছিল। তারআগে কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে প্রাইভেটকারে করে শহরের দিকে আসার সময় কয়েকজন যুবলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা মোটরসাইকেলে এসে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এসময় হাবিবুর রহমান হাবিব দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে স্কুলমাঠে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে হাবিব ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাশের একটি বাড়িতে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ’

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খান বাংলানিউজকে জানান, ‘হাবিবের নিতম্বে চারটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। গভীর ছুরিকাঘাতে হাবিবের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। প্রথমে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকি বাংলানিউজকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে কারা হামলা চালিয়েছে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সন্দেহজনকভাবে আট জনকে আটক করা হয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পাবনা-৪ আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আহমেদ হোসেন ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। ঈশ্বরদীতে যেন কোনো ভায়োলেন্স না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিলো। এরপরও যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মিন্টু হামলায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে জড়িত করার অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।  

হামলার ঘটনার জন্য বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘হাবিবের অভিযোগে বিএনপির উপজেলা কমিটি বাতিল ও পৌর কমিটি স্থগিতের ঘটনায় বিএনপির তৃণমূলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা তার ওপর বিক্ষুব্ধ। গত ২২ ডিসেম্বর বিক্ষুব্ধ বিএনপি তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বিশাল ঝাঁটা মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে হাবিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। এসময় তারা হাবিবকে ঈশ্বরদীর মাটিতে পা রাখতে দেবে না বলেও ঘোষণা দেয়। এ ঘটনাই প্রমাণ করে যে কারা হামলা করেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮/আপডেট সময়: ১৭০০ ঘণ্টা
আরএ/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।