নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৪টার দিকে বেসরকারিভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
ফলাফল ঘোষিত হওয়া ২৯৮টি আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৫৬টি আসন, জাতীয় পার্টি ২২টি আসন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২টি আসন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি আসন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ২টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (আম্বিয়া) ১টি আসন, তরিকত ফেডারেশন ১টি এবং জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি ৫টি আসন ও গণফোরাম ২টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। এছাড়াও স্বতন্ত্র ৩ জন প্রার্থী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়েছেন।
স্থগিত থাকা দুটি আসনের ফলাফল কোনোভাবেই প্রভাব ফেলবে না আওয়ামী লীগের সরকার গঠনে। চাইলে মহাজোটের শরিক দলগুলোকে ছাড়াও এককভাবেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবে আওয়ামী লীগ। সেই হিসেবে ইতিহাস রচনা করে টানা তৃতীয় দফায় সরকার গঠন করবে দলটি।
আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের ফলে দশম জাতীয় সংসদের মতো প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে।
অন্যদিকে সরকারিবিরোধী প্রধান নির্বাচনী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ৬টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোট পড়েছে ৫১ দশমিক ৪১ শতাংশ।
ইভিএমের আসনগুলো হলো ঢাকা-৬ ও ১৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২, রংপুর-৩ ও চট্টগ্রাম-৯। ৬টি আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৪ প্রার্থী এবং দলটির নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির ২ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দলই অংশ নেয়। মোট ১ হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৭৩৩ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ১২৮ জন।
জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা প্রথমে ৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে ১২ নভেম্বর এ নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা করেন। এ হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ছিল ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটগ্রহণের তারিখ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বর।
ভোটগ্রহণে অনিয়মের কারণে ২৯টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ হারান ১৭ ব্যক্তি।
সংসদ নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি ভোটকক্ষে ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছেন ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২জন। আর তরুণ ভোটার রয়েছে ২ কোটি ১০ লাখের মতো।
দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি। এরমধ্যেই সংসদ ভেঙে দিয়ে আবারো শপথ নিয়ে একাদশ সংসদে বসবেন নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮
ইইউডি/এমইউএম/এসএইচএস/এনটি/এমজেএফ/এইচএ/এসএইচ/