শনিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করবার জন্য যে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল সেই উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে করোনা ভাইরাসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের যে শাসনব্যবস্থা সেটা কতটা ভঙ্গুর। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে গেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আছে বলেই মনে করা যায় না। সাধারণ রোগীরা যাদের ক্যান্সার হয়েছে, যাদের হয়ত লাঞ্চ ক্যান্সার বা টিবি আছে বা যাদের এপেন্ডিসাইটিস রয়েছে তারা কোনো চিকিৎসা পায় না। এটা বাস্তবতার কথা বলছি।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ দলের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিলি করেছি, মাস্ক বিতরণ করেছি। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ড্যাব চিকিৎসক-স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পিপিই দিয়েছে, হটলাইন চালু করেছে রোগীর পরামর্শ দেওয়ার জন্য। আমরা ৮৭ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজ ঘোষণা করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, এটা বিবেচনা করা হোক। যেদিন আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করি ওইদিন সরকারি দলের কয়েকজন নেতা আমাদের যাচ্ছে-তাই তিরস্কার করেছে। অথচ তার পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী আবার ৭৩ হাজার কোটি টাকার একটা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য এটাকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ৯৫ হাজার কোটি টাকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তার মধ্যে ৭৭ হাজার কোটি প্রণোদনা ব্যাংক ঋণ। মাত্র ১৬ হাজার কোটি টাকা সরকারের বাজেট ও সরকারি কোষাগার থেকে যাচ্ছে। এসব আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এর জবাবও সরকার দিচ্ছে না।
তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তথ্যমন্ত্রী সাহেব আমাদের গালিগালাজ করেছেন এবং বলেছেন যে, আমরা নাকি শুধুমাত্র কথাই বলছি, আমরা কোনো কাজ করছি না। আমরা বিরোধী দল হিসেবে ১২/১৩ বছর তাদের নির্যাতনের পরেও আমরা যে কাজটুকু করেছি আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, আমরা তাদের দল থেকে অনেক বেশি কাজ করেছি। ইতিমধ্যে আমরা ৭ লাখ পরিবারের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি সীমিত শক্তির মধ্য দিয়ে। প্রতিদিনই আমাদের এই সংখ্যা বাড়ছে এবং এটা আরও বাড়বে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন এখন রাজনৈতিক বির্তকের সময় নয়, এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সময় নয়। অহংকার বাদ দিয়ে আসুন সমগ্র জাতিকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করি, ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র জাতিকে করোনা ভাইরাসের যে আগ্রাসন সেই আগ্রাসন মোকাবিলা করার জন্য আমরা চেষ্টা করি। সেই উদ্যোগ আপনারা গ্রহণ করুন।
বিভিন্ন সময়ে গুম-খুন হওয়া এবং নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ঈদ উপহার প্রদানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
দলের নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, আতিকুর রহমান রুমন, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, নাজমুল হাসান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়:১৬১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
এমএইচ/এইচএডি/