করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে অবস্থান করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চলছে।
গত সোমবার (২৭ এপ্রিল) সাংসদ ছোট মনির এবং তার কয়েকজন সমর্থক গোপালপুরে এক কৃষকের জমির ধান কেটে দেন।
গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক সাইফুল ইসলাম তালুকদার জানান, সাংসদ ওইদিন মানুষের ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে গোপালপুর উপজেলা অফিসের দিকে যাওয়ার পথে পৌর এলাকার সুন্দর গ্রামে এক কৃষককে ধান কাটতে দেখেন। তিনি কৌতূহলবশত ওই কৃষকের কাছে যান এবং কুশলাদি বিনিময় শেষে কয়েক গোছা পাকা ধান কাটেন। সেটিকে কেউ কেউ অপপ্রচার চালিয়ে নিচু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
যার জমির ধান ওইদিন কাটা হয়েছে সেই কৃষকের নাম সুজন মিয়া। তিনি জানান, বৈরান নদীর নিচু জমিতে তিনি ২০ শতাংশ ব্রি ধান-২৮ জাতের বোরো ধান লাগিয়েছেন। আগাম জাতের হওয়ায় শীষের ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর তলদেশে পানি জমছে। ভারী বর্ষণ হলে জমির ধান ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড বৈরাণ নদীর খনন কাজ করছে। তার ধানী জমি থেকে পাঁচশ গজ দুরে এ খনন এসে ঠেকেছে। তাই ক্ষেতের পাকা ধান কাটা খুব জরুরী। কিন্তু করোনার কারণে শ্রমিক না মেলায় নিজেই ক্ষেতের ধান কাটছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে সাংসদ ছোট মনির দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নদীর পাড় ধরে যাওয়ার সময় তাকে একা ধান কাটতে দেখে কাছে আসেন। পরে তিনি নিজ থেকেই কয়েক গোছা ধান খাটেন। এরপর সাংসদের সঙ্গে থাকা কয়েক নেতাকর্মী ১০/১২ আঁটি ধান কাটেন।
গোপালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, এবার এ উপজেলায় ১৩ হাজার ৭০০ হেক্টরে বোরোর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উফসী ব্রি ধান- ২৮ জাতের ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর। ব্রি ধান-২৮ আগাম জাত। কৃষি বিভাগ গত ২২ এপ্রিল নমুনা শস্য কর্তন শুরু করেছে। আর সুজন মিয়ার জমির ধান পেকে গেলেও পাতা এখনও সবুজ। উফসী জাতের ধানের বৈশিষ্ট্য হলো ধান পেকে যাওয়ার পরও কিছুদিন পাতা সবুজ থেকে যায়।
সাংসদ তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির বাংলানিউজকে জানান, তিনি কৃষককে একা ধান কাটতে দেখে সেদিন এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে উৎসাহ দিতে কিছু ধান কেটে দেন। তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরাও কিছু ধান কাটেন। এ নিয়ে একটি মহল অপপ্রচার করছেন তারা খুব নিম্নরুচির পরিচয় দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২০
ইউবি