ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানালেন চরমোনাই পীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২০
মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানালেন চরমোনাই পীর

ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম, হেফাজতে ইসলামীর আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

মঙ্গলবার (৮ডিসেম্বর) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দেশের চলমান অস্থিরতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আহুত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান দলটির আমির।

লিখিত বক্তব্যে মুফতি রেজাউল করীম বলেন, আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মাওলানা মামুনুল হকের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি যারা দেশের ওলামা সমাজকে এবং সম্মানিত ধর্মীয় ব্যক্তিদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে, কটূক্তি করে, ব্যাঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে অপমান অপদস্ত করে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়, সংঘাত, মারামারি ও মল্লযুদ্ধের আহ্বান জানায় তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করার উদ্যোগ নেবে। আর সরকার যদি ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নিজেদের নিরাপত্তা, মর্যাদা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রয়োজনেই দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

চরমোনাই পীর আরও বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঢাকা কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে স্থাপিত হতে যাওয়া ভাস্কর্য নিয়ে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ৫/৭টি মসজিদের মিলন মোহনায় ২টি মসজিদের অবকাঠামো ভেঙে এই পয়েন্টে ভাস্কর্য স্থাপনের ফলে স্থানীয় ইমাম-মুসল্লি ও তৌহিদি জনতা সেখানে ভাস্কর্যের বদলে বিকল্প কোনো উত্তম পন্থায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণীয় করে রাখার দাবি জানিয়েছিল। সরকারের বিদ্যমান আইন-কানুন মেনে তৌহিদি জনতা সমাবেশ করেছে, সেখানে শালীন ভাষায় যৌক্তিকভাবে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করা হয়েছে। একই সাথে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানানোর বিকল্প পন্থাও প্রস্তাব করা হয়েছে। বিষয়টি একেবারে স্বাভাবিক নাগরিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু একটি সুবিধাভোগী মহল বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশে চরম উস্কানি ও উত্তেজনা তৈরি করছে।

তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরামদের দাবির মধ্যে মরহুম বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোনো বিদ্বেষ অসম্মান ছিল না। বরং বিষয়টি ছিল দেশের প্রায় ৯০ ভাগ জনগণের বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মূর্তি স্থাপন না করে অন্য কোনো পন্থায় তাকে স্মরণ করার দাবি।

ভাস্কর্য ও মূর্তি ইস্যুতে চরম অস্থীতিশীলতার মধ্যে দেশের শান্তি ও স্থীতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সীমাহীন ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে এসেছে দাবি করে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, এরই মাঝে গতকাল (সোমবার) মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি ভুঁইফোড় সংগঠন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীমের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। সঙ্গে আরও দুজন বিশিষ্ট আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হকের নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু মনে করিনি। যে কারণে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দলীয় ব্যানারে বা কোনো সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে কোনো কর্মসূচিও দেইনি। উগ্রবাদী শক্তি ও তাদের সহযোগীরা আমাদের নীরবতাকে দুর্বলতা ভেবেছে। আমি সরকারকে এসব সীমালঙ্ঘনকারীদের নিবৃত করার অনুরোধ জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।