ঢাকা, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২২
ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে: ফখরুল

ঢাকা: ক্ষমতাসীনরা পরিকল্পিতভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি গঠিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘উত্তাল মার্চ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তারা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। স্বাধীনতায় যাদের অবদান রয়েছে তাদের অস্বীকার করে শুধুমাত্র একটি দল একজন ব্যক্তি এবং একটি পরিবারকে মহিমান্বিত করছে। এ কাজটি পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালে যে আশা আকাঙ্খা নিয়ে মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, প্রাণ দিয়েছিল, সেই স্বপ্নকে ভুলুণ্ঠিত করে দিয়ে একটি একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চাইছে। ১৯৭১ সালে আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম আমরা সত্যিকারে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করবো। আমরা আমাদের খেটে খাওয়া কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবো। আমরা কল্যাণমূলক একটা রাষ্ট্র নির্মাণ করবো। যেখানে ন্যায় বিচার থাকবে, মানবিক মর্যাদা থাকবে, সাম্য থাকবে, অর্থনৈতিক বৈষ্যমের সৃষ্টি হবে না। আজকে ৫০ বছর পরে যে সরকার আমাদের জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে সেই সরকার আমাদের সেই সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটাকে তারা অস্বীকার করতে চায়। তারা আসম আবদুর রব, জামাল হায়দার, মাহমুদুর রহমান মান্নাদের অবদান, প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের অবদান অস্বীকার করতে চায়। তারা একবারও তাদের নাম উচ্চারণ করে না। যে রাষ্ট্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সেই রাষ্ট্র আজকে সম্পূর্ণভাবে একটা ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই সংগ্রাম করেছেন তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আজকে এই রাষ্ট্রে যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেন তাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ছয় শতাধিক মানুষকে গুম করা হয়েছে। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা এখন পর্যন্ত সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারিনি।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে বর্তমান সরকারের পার্থক্য কোথায় প্রশ্ন করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, তারাও সেদিন এই অঞ্চলের মানুষকে হত্যা করেছে। আজকে এরাও সেই একইভাবে হত্যা করছে। কোন জায়গায় কোন খাতে তারা এই দেশের মানুষের জন্য একটা শুভ চিন্তা করেছে? আজকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে মানুষ সড়কে নিরাপদ নয়, বাড়িতে নিরাপদ নয়, মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। আমি সমস্ত রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোকে আহ্বান জানাই আসুন বৃহত্তর স্বার্থে এই দেশকে রক্ষার জন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলি। যে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে অসুস্থ অবস্থায় বন্দি হয়ে আছেন তাকে মুক্ত করি। আমাদের নেতা তারেক রহমান যিনি মিথ্যা মামলার কারণে বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন তাকে ফিরিয়ে আনি। আমাদের যে ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা আছে সেই মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জেএসডি সভাপতি আসম রব, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়াদার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, ঢাবির সাবেক শিক্ষক ড. মাহবুব উল্লাহ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২২
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।