ঢাকা: শিল্প, বাণিজ্যিক ও সিএনজিসহ ৮টি খাতে গ্যাসের দাম বাড়াতে চায় সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) জমা দেওয়া হয়েছে।
ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে আরো জানিয়েছেন, তারা শিগগিরই গণশুনানির ব্যবস্থা করবেন। তবে সব মিলিয়ে এক মাসের মধ্যে আদেশ আসতে পারে। পেট্রোবাংলার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা মূল্যায়ন করব, এছাড়া শুনানিতে সব পক্ষকে ডাকা হবে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে।
এই প্রস্তাবে পেট্রোবাংলা আবাসিক ছাড়া অন্যান্য আট খাতের গড়ে ৩৪ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবে শিল্প-কারখানায় ক্যাপটিভ পাওয়ারে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম একশভাগ রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ক্যাপটিভ পাওয়ারের বর্তমান দর ৪ দশমিক ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের মূল্য ৯ টাকা ৮৯ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া শিল্প-কারখানায় বর্তমান দর প্রতি ঘনমিটার ৫ দশমিক ৮৬ থেকে ১ টাকা ৯১ পয়সা বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৭ টাকা, সিএনজি গ্যাস ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা, সার কারখানায় ২ দশমিক ৫৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৮৩ টাকা, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২ দশমিক ৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৯৭ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বাণিজ্যিক খাতে সরবরাহকৃত গ্যাস বর্তমান মূল্য ৯ দশমিক ৪৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ দশমিক ৩৬ টাকা, চা-বাগানে ব্যবহৃত গ্যাস ৬ দশমিক ৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৬ পয়সা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে জানান, এতদিন আমরা পানির দরে গ্যাস দিয়ে এসেছি। যে কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসেও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল সরকার। তখন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও সিএনজি চালিত গণপরিবহন মালিক সমিতি ধর্মঘটে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তারা হুমকি দিয়েছিল গণশুনানি ছাড়া এবং বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে দাম বাড়ালে সেদিন থেকেই অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। পরে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় সরকার। এর আগে দুদফায় বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে দাম বাড়ায় সরকার।
উল্লেখ্য সর্বশেষ ২০০৯ সালে বিইআরসি সব ধরনের গ্যাসের মূল্য ১১ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়িয়েছিল। এছাড়া গত বছরে দু’ দফায় সিএনজির দাম বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা করা হয়।
বর্তমানে ৮১ টি কূপ থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ১৯৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন কিউবিক ঘনফুট উত্তোলন করা হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪২ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থাৎ ৯৩১ দশমিক ৮১ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৫৩ দশমিক ৯০ এমএমসিএফডি।
সার উৎপাদনে ২৮৯ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ৭৮ দশমিক ২ এমএমসিএফডি গ্যাস যা মোট উৎপাদনের ৩ দশমিক ৬ ভাগ, অন্যান্য গ্রাহকদের ১ হাজার ১৬৪ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবারহ করা হচ্ছে। যা মোট উৎপাদিত গ্যাসের ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১২
ইএস/ সম্পাদনা : নজরুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর