ঢাকা: ২০১২ সালে বিদ্যুৎ ঘাটতি কমে আসবে বলে সংসদে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ বাস্তবে পূরণ হচ্ছে না। সংসদীয় কমিটিতে খোদ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের বড় আকারের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু হচ্ছে না।
গত ৩ জুন সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরপর্বে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক জানিয়েছিলেন, সরকারের পরিকল্পনা যথাসময়ে বাস্তবায়িত হলে ২০১২ সালের শেষ দিকে বিদ্যুতের ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
এদিকে গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি মিলেয়ে মোট ১৩টি বড় আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এগুলোর সম্ভ্যাব্য উৎপাদন ক্ষমতা ৩ হাজার ৯১৩ মেগাওয়াট।
এগুলোর মধ্যে সরকারি খাতের চাঁদপুর কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টটি শুধু পরীক্ষামূলকভাবে চালু (টেস্ট রান) হয়েছে। সিরাজগঞ্জের ১৫০ মে.ওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চালু হওয়ার কথা রয়েছে বাকি সবক`টিরই উৎপাদনে যেতে আরো চার বছর সময় প্রয়োজন হবে। সরকারি খাতের ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনোটিই ২০১৪ সালের আগে উৎপাদনে আসবে না।
সরকারি খাতের খুলনা ১৫০ মে.ও. জিটি, হরিপুর ৩৬০ মে.ও. কম্বাইন্ড সাইকেল, আশুগঞ্জ ২২৫ মে.ও.সিসিপিপি, আশুগঞ্জ ৪৫০ মে.ও. সিসিপিপি, সিদ্ধিরগঞ্জ ৪৫০ মে.ও. কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পগুলি ২০১৩ ও ২০১৪ সালের বিভিন্ন সময়ে উৎপাদনে আসবে।
বেসরকারি খাতের ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটির উৎপাদন সময়কাল ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এগুলো হলো- বিবিয়ানা ৪৫০ মে.ও. সিসিপিপি (১ম ইউনিট), বিবিয়ানা ৪৫০ মে.ও. সিসিপিপি (২য় ইউনিট), মেঘনাঘাট ৪৫০ মে.ও. সিসিপিপি (২য় ইউনিট)।
এছাড়া বেসরকারি খাতের চট্টগ্রাম ১৫-৩০০ মে.ও. আমদানিকৃত কয়লাভিত্তিক প্রকল্প ও খুলনার ১৫০-৩০০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক প্রকল্প চালু করার সম্ভাব্য তারিখ ২০১৫ সালের জুন মাস। মাওয়া, মুন্সিগঞ্জ ৩০০-৬৫০ মে.ও. কয়লাভিত্তিক প্রকল্প চালুর সম্ভাব্য ২০১৬ সালের মার্চ মাস। এ তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ওরিয়ন গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর আশাবাদ ও মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংসদীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, “সংসদে মন্ত্রীরা কথা বলার সময় একটু চিন্তা করে বললে ভালো হয়। মন্ত্রীর বক্তব্য আর মন্ত্রণালয়ের তথ্যে মিল না থাকলে জনগণ বিভ্রান্ত হবে। ”
প্রতিমন্ত্রীর আশাবাদ ও মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য সম্পর্কে কথা বলতে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুবিদ আলী ভূইয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১২
এসএইচ/সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর;জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর[email protected]