জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্সের ‘ইসরায়েল আমাদের সবার হয়ে নোংরা কাজ করেছে’ মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। মার্সের এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিরোধীদল থেকে শুরু করে তার নিজের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক জোটের সদস্যরাও।
১৭ জুন কানাডাতে জি-৭ সম্মেলনে ইরান- ইসরায়েল যুদ্ধের বিষয়ে জার্মান সম্প্রচারমাধ্যম এসডিএফ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্স বলেন, ‘ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা হলো সেই নোংরা কাজ যা তারা সবার পক্ষ হয়ে করেছে। ’
চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্সের এই মন্তব্যের নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন জার্মানির রাজনীতিকরা।
১৯ জুন বৃহস্পতিবার ডিপিএ বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর কার্যালয়ের প্রধান থরস্টেন ফ্রাই চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্সের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘চ্যান্সেলর যা বলেছেন, তার তাৎপর্য হলো—ইরানের মতো একটি সন্ত্রাসবাদী শাসনের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকা বিশ্বশান্তির জন্য বিপজ্জনক। ’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে শুধু পারমাণবিক অস্ত্রই নয়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিও ইউরোপের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝারি দূরত্বের এই মিসাইলগুলো ইউরোপের বহু শহরকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। তাই বিষয়টি আমাদের সরাসরি উদ্বেগের। ’
ক্ষমতাসীন সিডিইউ নেতা চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্সের জোটসঙ্গী এসপিডি দলের পররাষ্ট্রবিষয়ক মুখপাত্র আদিস আহমেতোভিচ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এমন সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত উত্তেজনা প্রশমন। কিন্তু চ্যান্সেলরের বলার ধরন সেই লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয়নি। ’
বিরোধীদল গ্রিন পার্টির পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ডেবোরা ডুরিং চ্যান্সেলরের মন্তব্যকে ‘নির্দয় ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে ফিনল্যান্ডের তুরু-তে একটি সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া মার্সের ইসরায়েলবিষয়ক আরেকটি মন্তব্য ইউরোপে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছিল।
তিনি বলেছিলেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার সাম্প্রতিক হামলায় কী অর্জন করতে চাইছে, সেটি আমি বুঝতে পারছি না। যখন আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘিত হয়, তখন জার্মান চ্যান্সেলরও অবশ্যই কিছু বলতে বাধ্য। ’
এদিকে শুক্রবার ২০ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে জার্মান, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য বসছেন বলে জার্মান গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
এসএএইচ