ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের আরও একটি অ্যাওয়ার্ড পাবার সম্ভাবনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬
বাংলাদেশের আরও একটি অ্যাওয়ার্ড পাবার সম্ভাবনা সজীব ওয়াজেদ জয়

জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের সময় এবারও বাংলাদেশের বিশেষ একটি অ্যাওয়ার্ড পাবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে বিবেচিত প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এই বিশেষ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হতে পারেন।


এ তথ্যটি প্রকাশ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ‘এটি প্রদান করতে পারে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন একটি সংস্থা’-- ইভিসিএম (evcm) নিউজকে এ তথ্যটি জানান ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার শামীম আহমদ।

উল্লেখ্য, এর আগে প্রায় প্রতিবছরই বিভিন্ন সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ৪দিনের সফরের আলোকে ১৪ সেপ্টেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রদূত মোমেন আরো জানান, ‘এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অংশগ্রহণ বৈশ্বিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তিকে আরও সুসংহত ও উজ্জ্বল করবে। একই সাথে জাতিসংঘের হাত ধরে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের বহুমুখী সফলতা ও অবদানের কথা তুলে ধরারও সুযোগ তৈরি হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি’।

রাষ্ট্রদূত মোমেন জানান, ‘২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। ’ ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এবং পরে তৃতীয়বারের জন্যে আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের প্রতিবারই শেখ হাসিনা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেছেন।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার শামীম আহমদও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং প্রেস ব্রিফিং সঞ্চালনা করেন।

লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রদূত মোমেন। ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে আসার পরদিন থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পর ২২ সেপ্টেম্বরই প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়ায় যাবেন। সেখান থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ৭০ জন হলেও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীগণের একটি প্রতিনিধিদলও আসছেন নিজেদের খরচে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় করবেন। তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ সম্পর্কে মার্কিন ব্যবসায়ীদের অবহিত করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মোমেন জানান, ‘জাতিসংঘ বৈঠকে অংশগ্রহণকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ বেশ ক’টি বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ ও দ্বি-পাক্ষিক ইস্যুতে কথা হবে। বৈঠক হবে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের সাথেও। তবে মার্কিন সিনেট অথবা কংগ্রেসের কারো সাথে এবার বৈঠকের কর্মসূচি নেই। ’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত মোমেন জানান, ‘নতুন মহাসচিব নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে এবং বাংলাদেশ চাচ্ছে এ বিশ্ব-ফোরামের নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হোন একজন নারী। নারীর ক্ষমতায়নের স্লোগানে উজ্জীবিত বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই অনেকের সাথে এ নিয়ে কথা বলেছে। ’

এদিকে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য: পৃথিবী বদলে দেওয়ার বৈশ্বিক উদ্যোগ’ স্লোগানে নিউইয়র্কে ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার শুরু হয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলতি ৭১তম অধিবেশন। উদ্বোধনী দিনে অধিবেশনের নবনির্বাচিত সভাপতি ফিজির স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পিটার টমসন এই বছরের ১ জানুয়ারিতে গৃহীত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ অর্জনে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত টমসনের প্রস্তাব অনুসারে, এই অধিবেশনের স্লোগান হয়েছে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য: পৃথিবী বদলে দেওয়ার বৈশ্বিক উদ্যোগ’।

অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও পদ্ধতিগত প্রশ্ন বিবেচনায় অতিবাহিত হবে। প্রধান আকর্ষণ দুই সপ্তাহব্যাপী সাধারণ বিতর্ক। এটি শুরু হবে ২০ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ বিশ্বের বিপুলসংখ্যক নেতা এই অধিবেশনে অংশ নেবেন। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্ব সংস্থার বৈঠকে অংশ নেবেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে।

অন্যদিকে, বারাক ওবামা এই অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর অষ্টম ও শেষ ভাষণটি দেবেন। শেখ হাসিনার এটি হবে লাগাতার অষ্টম ভাষণ। নির্বাচিত নারী সরকারপ্রধান হিসেবে এটি জাতিসংঘের ইতিহাসে রেকর্ড বলে সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেন।

এই অধিবেশনেই বর্তমান মহাসচিব বান কি-মুনের স্থলে জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব নির্বাচিত হবেন। সাধারণ পরিষদের বিদায়ী সভাপতি ডেনমার্কের মগেন্স লিকেটফট তাঁর বিদায়ী ভাষণে মহাসচিব নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অধিকতর স্বচ্ছতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এই স্বচ্ছতার ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী মহাসচিবের নির্বাচনের বৈধতা।

উল্লেখ্য, মগেন্স লিকেটফটের ব্যক্তিগত আগ্রহে এই প্রথমবার মহাসচিব নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি অধিকতর স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি অনানুষ্ঠানিক ভোট গৃহীত হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ এ ব্যাপারে কোনো ধরনের তথ্য প্রকাশে অনাগ্রহ দেখিয়েছে। লিকেটফট নিরাপত্তা পরিষদের এই নেতিবাচক অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর বিদায়ী ভাষণে তিনি পরিষদের সদস্যদের প্রতি এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ উন্মুক্ত রাখার আবেদন জানান।

৭১তম অধিবেশনের যে খসড়া এজেন্ডা গৃহীত হয়েছে, তাতে রয়েছে মোট ১৭০টি বিষয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ১৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের উদ্যোগে শরণার্থী ও অভিবাসী বিষয়ক এক শীর্ষ সম্মেলন। রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান পর্যায়ের এই শীর্ষ বৈঠকে বিশ্বব্যাপী শরণার্থী ও অভিবাসী সংকট নিরসনের লক্ষ্যে এক সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। পরের দিন ২০ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠিত হবে ‘বিশ্বজুড়ে শরণার্থী সংকট’ শীর্ষক রাষ্ট্রনেতাদের এক বৈঠক। এছাড়া অধিবেশনের কর্মসূচির মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্যারিস চুক্তির আইনগত অনুমোদন নিয়েও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৩ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।