ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

নির্মাণশৈলীতে সমৃদ্ধ নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
নির্মাণশৈলীতে সমৃদ্ধ নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ।

ফেনী: গত কয়েক মাস প্রতি সপ্তাহে যাওয়া হচ্ছে পাশের জেলা নোয়াখালীতে। একটাই উপলক্ষ আইন পরীক্ষা।

পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া-আসার পথে প্রতিদিনই নজর কাড়ে মসজিদটি। মসজিদকে ঘিরে প্রাঙ্গণের বিশালতা ও বাহ্যিক সৌন্দর্যের কারণে শুধু আমি নই, যে কেউই দেখে তৃপ্ত হবেন। চলতি পথে নামব নামব করেও নামা হয়নি বেশ কয়েকদিন। গতকাল নেমে পড়লাম অটোরিকশা থেকে, সঙ্গে থাকা অন্যদের বললাম আপনারা অপেক্ষা করুন, আমি মসজিদটি দেখে আসি।

মূল রাস্তা থেকে মসজিদের মেইন গেইট দিয়ে ঢুকেই চোখে পড়ে মসজিদটির প্রাঙ্গণের বিশালতা। মসজিদ লাগোয়ো বিশাল একটি দীঘি, সেটির সৌন্দর্য যেন কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে মসজিদটিকে। যোহরের নামাজের ওয়াক্ত হওয়ায় মুসল্লিদের আনাগোনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল পুরো প্রাঙ্গণ।  



জুতাজোড়া রেখে মসজিদের ভেতর প্রবেশ করতেই শরীরে অনুভূত হলো অন্যরকম প্রশান্তি। মসজিদের চারপাশ, দেয়াল এবং ছাদ সবটাই দেখার মতো। চারপাশে যেমন আছে মুসলিম স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন তেমনিভাবে আছে দেশীয় লোকজ ঐতিহ্য।

একটু একটু করে হেঁটে দেখা গেল বাইরে থেকে যতটা বড় মনে হয়েছে ভেতরের দৈর্ঘ-প্রশস্ততা যেন আরও বেশি। কয়েক অংশে বিভক্ত এই মসজিদে প্রতি ওয়াক্তেই যেন কয়েক হাজার মানুষ খুব আরাম করে নামাজ আদায় করতে পারবেন।  নোয়াখালীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জেলা মসজিদ মাইজদী বড় মসজিদ নামেও পরিচিত। শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কও এ মসজিদের নামে রয়েছে।  



প্রবীণ ইসলামী শিক্ষাবিদ নোয়াখালী কারামাতিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিন উল্ল্যাহ বলেন, নোয়খালী শহরের জামে মসজিদটি প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯৪১ সালে। ইমাম উদ্দিন নামের এক সওদাগর নিজ জমিতে নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ স্থাপন করেন। মূল নোয়াখালী শহরের সঙ্গে এই জামে মসজিদটিও মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে জেলার মূল শহর মাইজদীতে স্থানান্তর করার হয় ১৯৫০ সালে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত আর্থিক সহায়তায় নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ পুনঃনির্মাণ করা হয়। এ কারণেই নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদটি পুরাতন নেয়াখালী শহরের স্মৃতি। এতে এখনও আগের মসজিদের অনেক নিদর্শন রয়েছে।

মসজিদটির খতিব মুফতি মাওলানা মো. দিলাওয়ার হোসাইন বলেন, প্রায় ৩ দশমিক ৮ একর জায়গার ওপর নির্মিত হয়েছে এ মসজিদটি। মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৩০ ফুট এবং প্রস্থ ৮০ ফুট। প্রতিদিন এখানে নামাজ আদায় করেন হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। জুমায় তা কয়েকগুন হয়ে যায়। এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পেরে তৃপ্ত হন মুসল্লিরা।  



মসজিদটির ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, এর নির্মাণশৈলীতে মুসলিম ও দেশি লোকজ শিল্পের প্রভাব রয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরে থাকা পুরনো মসজিদের সুদৃশ্য ঝাড়বাতি, লোহার সূদৃশ্য গেইট ও অসংখ্য শ্বেত পাথরের টুকরো মসজিদের শোভাবর্ধন করছে অসাধারণ শৈল্পিকতায়। মসজিদের মূল ভবনে আছে ইসলামী স্থাপত্যে নির্মিত তিনটি সূদৃশ্য গম্বুজ ও ৯টি মিনার।  

এছাড়া ছোট একতলা ভবনে নকশাকারে ফুল-লতাপাতাসহ কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও উপদেশমূলক বাণী খচিত হয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে মদিনাতুল উলুম নামের একটি কাওমী মাদ্রাসা। সেখানে ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। এ মসজিদকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে আরও অনেক ইসলামী কর্মকাণ্ড।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৩
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।