কিন্তু আল্লাহর কি কুদরত, রোজা আসতে না আসতেই রহমতের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। রোজার প্রথম দিন রোববার (২৮ মে) রাজধানীজুড়ে এক পশলা বৃষ্টি প্রশান্তি নিয়ে আসল লক্ষ-কোটি মুমিন হৃদয়ে।
‘রমজান শুরুর আগের গরম আর রোজা শুরু হলেই বৃষ্টি- এ আল্লাহর বিশেষ রহমত। ’ যেমনটা বলছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ফল ব্যবসায়ী আবদুল আলীম। তিনি বলেন, ‘দু’দিন আগেও খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম- এত গরমে ফুটপাতে ব্যবসা করে রোজা রাখা কী কষ্টটাই না হবে! কিন্তু আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হওয়ায় সেই টেনশন দূর হয়ে গেছে। ’
তিনি বলতে থাকেন, ‘বৃষ্টি হলে ব্যবসার কিছুটা সমস্যা হলেও রোজাগুলো আরামে পালন করতে পারব। আর আমার কাছে এই মাসে ব্যবসার চেয়ে রোজাটাই বড়। ’
দুপুরে রিক্সায় করে ধানমন্ডি যাওয়ার পথে বৃষ্টি নামল। তড়িগড়ি করে ড্রাইভার পলিথিন (কাগজ) বের করে দিলেন। আমি বৃষ্টি থেকে বাঁচলাম। কিন্তু ড্রাইভার ভিজে ছোপ ছোপ। তাকে বললাম, এভাবে ভিজলেন- অসুখ বাঁধবে না? তিনি বললেন, ‘রোজা রেখে রিক্সা চালানো অনেক কষ্টের। বৃষ্টি হলে সেই কষ্ট অর্ধেক কমে যায়। তাই বৃষ্টিতে ভিজতে পারাই আরাম। ’
রহমতের রমজানে বৃষ্টি এলো প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে। বৃষ্টি মহান প্রভুর রহমত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তুমি পৃথিবীকে নিষ্প্রাণ দেখতে পাও। এরপর আমি যখন এর ওপর পানি বর্ষণ করি তখন তা সক্রিয় হয়ে ওঠে ও ফেঁপে-ফুলে ওঠে এবং প্রত্যেক প্রকার উদ্ভিদের সবুজ-শ্যামল শোভামণ্ডিত জোড়া উৎপন্ন করে। ’ -সূরা হজ: ৫
অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহ আকাশ থেকে পানি অবতীর্ণ করেছেন এবং পৃথিবীকে মৃত্যুর পর এর মাধ্যমে জীবিত করে তুলেছেন। নিশ্চয় এতে সেসব লোকের জন্য রয়েছে এক বড় নিদর্শন যারা কথা শোনে। ’ –সূরা নাহল: ৬৫
সূরা বাকারায় আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিছানা ও আকাশকে ছাদরূপে বানিয়েছেন এবং মেঘ থেকে পানি অবতীর্ণ করেছেন। এরপর তা দিয়ে তিনি তোমাদের জন্য রিজিকরূপে নানা ধরনের ফলফলাদি উৎপন্ন করেছেন। অতএব, তোমরা জেনে-শুনে কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করাবে না। ’ -সূরা বাকারা: ২২
রমজানের রমহত (বৃষ্টি) রোজা শেষ অবধি পশলা হয়ে নেমে আসুক। মুমিন হৃদয়ে প্রশান্তির পরশ প্রতিদিন বুলিয়ে দিক। সকল শ্রেণির মুসলিম মানুষের জন্য রোজা পালন সহজ হয়ে উঠুক- এই প্রত্যাশা মহান প্রভুর দরবারে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
এমএইউ/