ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

রহমতের বানে পাপ ভেসে যায়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
রহমতের বানে পাপ ভেসে যায় রহমতের বানে পাপ ভেসে যায়

অধিক ইবাদতের মাস রমজান। রমজান মাসে আল্লাহর রহমতের অফুরান ধারা এমনভাবে প্রবাহিত হয় যে, বান্দার পাপসমূহকে খড়কুটার মতো ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে বান্দার কৃত গুনাহ জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যায়। বরকতময় এ মাসে মাবুদ সবার জন্য রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন। 

বেশি বেশি নফল ইবাদত-বন্দেগি, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া-দরুদ, তাওবা-ইস্তিগফার ও আল্লাহর দরবারে বিনয়াবনত প্রার্থনা পেশের মাধ্যমে রহমত কামনার উত্তম মাস মাহে রমজান।  

নবীজী (সা.) বলেছেন, রমজানের নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরজের সমতুল্য।

অর্থাৎ অন্য মাসে ফরজ ইবাদত করলে যে সওয়াব মিলে আল্লাহতায়ালা রমজানে নফল ইবাদতের মাধ্যমে বান্দাকে সেই সওয়াব দান করেন। নফল ইবাদত আল্লাহর নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। কেউ যদি অফিসে ১০টা থেকে ৫টার ডিউটির পরও অতিরিক্ত সময় দেয় তাহলে সে যেমন ধীরে ধীরে অফিসে কর্তার বিশ্বস্ত ও আপন হয়ে ওঠে, তেমনি ফরজ ইবাদতের পর নফল ইবাদতে মনোনিবেশ করলে বান্দা ধীরে ধীরে মাওলার কাছের ও আপন হয়ে যান।  

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এ মাসে দয়াময় আল্লাহতায়ালা তোমাদের প্রতি শুভ দৃষ্টি দেন এবং রহমত বর্ষণ করেন, তোমাদের সব গুনাহ মাফ করে দেন ও দোয়া কবুল করেন। তোমাদের মধ্যে যদি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী অধিক সৎ কাজ করে শীর্ষস্থান অধিকার করতে পারে, আল্লাহ তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে থাকেন এবং বেশি বেশি ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করেন।  

নবীজী (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা অনেক বেশি সৎ কাজ করে আল্লাহকে দেখিয়ে দাও। আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে এ মাসে একমাত্র হতভাগ্যরাই বঞ্চিত থাকে। ’ (মিশকাত)

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মাহে রমজানের পূর্ণ একটি মাস রোজা পালন করে, ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকে, এমন রোজাদার ব্যক্তিরাই দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম। বুদ্ধিমান ও জ্ঞানীরা এ সুবর্ণ সুযোগের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করে।  

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ  হয়েছে, আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করলে কেউ তা নিবারণ করতে পারে না এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে এরপর কেউ তার উন্মুক্তকারী নেই। ’ (সূরা আলফাতির-২) 

রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মুমিন বান্দারা আত্মিকভাবে নিজেকে একজন প্রকৃত মুমিন হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। তাই আল্লাহতায়ালা রমজান মাসে তার রহমতের দরজা অবারিত করে দেন। যারা অপরিণামদর্শী, তারা এসবের খুব একটা গুরুত্ব দেয় না, বিভিন্ন অজুহাতে রোজা রাখে না, অশালীনতা ও প্রকাশ্যে পানাহার করে। এসব অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ।  

নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যদি প্রদত্ত অবকাশ ও অসুস্থতা ব্যতীত রমজান মাসের একটি দিনও রোজা ভঙ্গ করে, জীবনভর রোজা রাখলেও তার পরিপূরক হবে না। ’ (তিরমিজি) 

যে রমজান মাসকে আল্লাহ এত অধিক মর্যাদাপূর্ণ, রহমত ও বরকতময় করেছেন সেই মহান মাসের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করা কি আমাদের উচিত নয়? আমাদের কি উচিত নয় এ মাসে অনেক বেশি ইবাদতে মগ্ন থাকা? এ মাসে অনেক বেশি সওয়াব কামানোর প্রচেষ্টা চালানো?

লেখক: মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।