ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

২ বছর পর জমছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
২ বছর পর জমছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার পুরান ঢাকার চকবাজারে বাহারি ইফতারের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা | ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বিধিনিষেধ নেই, করোনার চোখ রাঙানিও কম। তাই অন্যান্য বছরের মতো পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও দোকানে বাহারি ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।

রমজানজুড়ে ইফতারের ঐতিহ্য মানেই পুরান ঢাকা। রাজধানীর এ অঞ্চলের চকবাজারের ইফতার সামগ্রীর খ্যাতি আর ঐতিহ্যের কথা এখন আর কারোরই অজানা নেই। রমজান উপলক্ষে প্রতিবারই জমে ওঠে এই ইফতারের বাজার। রোজার শুরুতেই বাহারি ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা।

এবারের রমজানেও সেজে উঠেছে পুরান ঢাকার চকবাজার। বিশেষ করে গত দুই বছর করোনার কারণে ইফতারের বাজার সেভাবে না বসায় এবার রমজান মাসজুড়ে এখানে বসবে রকমারি ইফতারের পসরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে শুরু করে ঢাকার বাইরের অনেক মানুষও আসবে এখান থেকে ইফতার নিতে। বিশেষ করে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ এবং কাবাবের কথা এলেই চকবাজারের নামটি আসে সবার আগে।



রোববার (৩ এপ্রিল) রমজানের প্রথম দিনেই ইফতার বিক্রির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। আর পুরো চকবাজার ছিল জমজমাট।

এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুরান ঢাকার চকবাজার, জনসন রোড, ইংলিশ রোড়, কলতাবাজার, সুত্রাপুর বাজার, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারী কাঁচাবাজারের আশেপাশের সড়ক ঘুরে দেখা যায়, নানা পদের খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। দুপুরের আগে থেকে দোকানগুলোয় ইফতারের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি শুরু হয়। বিকেল থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। চলে ইফতারের আগ পর্যন্ত।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, রকমারি ইফতারির সাজে চকবাজার ইফতারিপাড়া অনেকটাই মোঘল ঐতিহ্যের ধারক। এখানকার ইফতারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য—আস্ত মুরগির কাবাব, মোরগ মুসাল্লম, বটিকাবাব, টিকাকাবাব, কোফতা, চিকেন কাঠি, শামিকাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতিকাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, জিলাপি, শাহী জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, সৌদি পানীয় লাবাং, কাশ্মীরি সরবত, ইসবগুলের ভুসি, পুরি এবং ৩৬ উপকরণের মজাদার খাবার ‘বড়বাপের পোলায় খায়’সহ নানান পদ।



ব্যবসায়ীরা জানান, বাহারি ইফতারের মধ্যে গরুর সুতি কাবাব কেজি প্রতি ১২০০ টাকা, খাসির সুতি কাবাব ১৪০০, কোয়েল পাখির রোস্ট ৬০ থেকে ৮০ টাকা পিস, বড় বাপের পোলায় খায় ৬০০ টাকা কেজি, ছোলা-ঘুঘনি ২৮০ টাকা কেজি, পেশতা রুটি ৭০ টাকা পিস, শাহী পরটা ৩০ থেক ৬০ টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট ৩৫০, ফালুদা ছোট বক্স ১০০, বড় বক্স ২০০, দইবড়া ২০০ থেকে ৪৪০ টাকা কেজি, রেশমি জিলাপি ৩০০ টাকা, সাধারণ জিলাপি ২০০ টাকা কেজি।

ইফতার কিনতে আসা নিসার হোসেন বলেন, পুরান ঢাকার প্রতি ঘরে ঘরেই রমজানে ইফতারি বানানোর রেওয়াজ আছে। তারপরও পুরান ঢাকার বাসিন্দারা সবসময় বাইরের খাবারের প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করে। বাহারি ইফতারির টান সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে পুরান ঢাকাইয়াদের মধ্যে। তবে এবারে ইফতারে দামটা একটু বেশি।

তবে ব্যবসায়ীদের মতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়ার কারণেই বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর দাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।