ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০১ জিলকদ ১৪৪৬

সারাদেশ

জমি বণ্টনের দাবিতে স্বামীর মরদেহ আটকে সালিশ, সমাধানের পর দাফন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৫, এপ্রিল ২৮, ২০২৫
জমি বণ্টনের দাবিতে স্বামীর মরদেহ আটকে সালিশ, সমাধানের পর দাফন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মরাপাগলা গ্রামে জমি বণ্টনের দাবিতে স্বামীর মরদেহ আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) এ ঘটনায় দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম ও তার স্বজনরা প্রথম পক্ষের সন্তানদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মরদেহ দাফনে বাধা দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর আগে মাজেদ বিশ্বাস তার প্রথম স্ত্রীকে হারানোর পর হামফুল বেগমকে বিয়ে করেন। এই সংসারে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়লে, তার পুলিশে চাকরিরত দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বার বাবাকে চিকিৎসার অজুহাতে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নেন।

এ ঘটনার কিছুদিন পর উকিল নোটিশের মাধ্যমে হামফুল বেগমকে তালাকনামা পাঠানো হয়। হামফুল বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামীর জ্ঞানশক্তি ঠিক না থাকা অবস্থায় জোরপূর্বক তালাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য।
গত রোববার (২৭ এপ্রিল) মাজেদ বিশ্বাস রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মরদেহ বাড়িতে আনা হলে হামফুল বেগম এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে দাফনে বাধা দেন। পরে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য সালিশ বসে।

সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, সম্পত্তির আইনানুগ বণ্টন নিশ্চিত করার পর মরদেহ দাফন করা হবে। সালিশ চলাকালে প্রথম পক্ষের সন্তানদের সঙ্গে দ্বিতীয় পক্ষের কিছুটা বাগবিতণ্ডা হলেও শেষ পর্যন্ত আপসের সিদ্ধান্ত হয়।

এ বিষয়ে হামফুল বেগম বলেন, ২০ বছর ধরে আমি এই সংসারে আছি। স্বামীর সেবা-যত্ন করেছি। এখন সন্তানরা ষড়যন্ত্র করে সম্পত্তি লিখে নিয়েছে এবং আমাকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে চায়। আমি ন্যায়বিচার চাই।

এদিকে অভিযুক্ত ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বার সংবাদকর্মীদের কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি, বরং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, মানবিক দিক বিবেচনায় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা হামফুল বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রথম পক্ষের সন্তানরা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুই পক্ষকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে আপস মীমাংসা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে-আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সব অংশীদারের মধ্যে জমি সমবন্টনের পর মরদেহ দাফন করা হবে।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।