বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের বৈঠক হওয়ার দরকার ছিল। সরকার যদি বিএনপি চেয়ারপারসনেরর সঙ্গে দেখা করত, আমরা খুশি হতাম।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিল ও প্রতিনিধি নির্বাচনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ্যানি বলেন, আমরা তারেক রহমানের অপেক্ষায় আছি। তারেক রহমান নিজের প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন। তারেক রহমান এতদিন আসতে পারেন নাই। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি, তিনি দেশের বাইরে গেছেন। একটা সুযোগে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে কীভাবে তারেক রহমান কথা বলেছেন, মায়ের সালাম পৌঁছে দিয়েছেন। এই যে দুজনের কথাবার্তা, দেশ নিয়ে আলোচনা। আমরা মনোবল পেয়েছি, আশ্বস্ত হয়েছি।
এ্যানি প্রশ্ন রেখে বলেন, তারেক রহমান বিদেশে কথা বলছেন, এটা কি কোনো অপরাধ হয়েছে? তারেক রহমানের সঙ্গে অনেক আগে তো কথা বলার দরকার ছিল। কারণ বিএনপি একটি বড় দল, জিয়াউর রহমানের দল, গণমানুষের দল, আপসহীন নেত্রীর দল। খালেদা জিয়া কষ্ট করেছেন, শ্রম দিয়েছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন, মামলা খেয়েছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন। তাহলে এত বড় দলের নেতার সঙ্গে কথা বলবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তারেক রহমান তো বিদেশে বেড়াতে যাননি। তিনি বাধ্য হয়ে দেশের বাইরে আছেন। তার সঙ্গে বৈঠকটা হয়েছে, আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। এটাই তো আমাদের চাওয়া-পাওয়া ছিল।
খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার দরকার ছিল। তারপরও একটা দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে। কিন্তু রাজনৈতিক আলোচনার জন্য খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক হয়নি, যেহেতু তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু সরকার যদি বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করত, আমরা খুশি হতাম।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেছে, এমনিই তো আর পালান নাই। ১৭ বছর আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি, ত্যাগ স্বীকার করেছি। অনেকে গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, মামলা খেয়েছে, বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। পরিবার-পরিজন কষ্ট করেছে, আমরা সবাই মিলে আন্দোলন করেছি। আমাদের সামনের ভবিষ্যতের জন্য আমরা ভালো থাকতে চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের ভূমিকা কি ভালো ছিল? রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার ছিল, দুর্নীতি ছিল, দুঃশাসন ছিল, দুর্বৃত্ত ছিল। ১৭ বছরে এখান থেকে তারা বের হতে পারে নাই। এই আওয়ামী লীগে ফ্যাসিস্ট কখনো সাধারণ মানুষের জন্য গণমানুষের জন্য চিন্তা করে নাই। তারা সবসময় প্রভাব বিস্তার করে, লুটপাট করে, জিম্মি করেছে মানুষদের। একটা অত্যাচারিত সরকার ছিল, নির্যাতিত সরকার ছিল, খুনি সরকার ছিল। রক্তের দাগ এখনো শুকাই নাই। সবাইকে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন গণঅভ্যুত্থান স্মরণ করাই দিতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) যে সমস্ত অপকর্মগুলো করেছে, সেগুলো যদি আমরা ভুলে যাই ক্ষতি কিন্তু আমাদেরই হবে।
২০১৪ তে ভোট দিতে পারেন নাই, ২০১৮ তে ভোট দিতে পারেন নাই, রাতের অন্ধকারে ভোট হয়েছে। ২০২৪ এ আমাদের সবাইকে মামলা দিয়ে গণগ্রেপ্তার করে তারা ভোট করেছে। ভোট কীভাবে হয়, কীভাবে দিতে হয়, নতুন প্রজন্ম ভোটার হতে পারে নাই, ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে নাই।
৫ আগস্টের পর আমাদের সবকিছু গোছানোর সুযোগ হয়েছে, ভোট দেওয়ার মতো একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আমরা দলের ভোট আজকে করছি, আগামী দিনে আমরা দেশের ভোট করব। এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক বেল্লাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সারওয়ার, সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন, জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমাম সোহেল প্রমুখ।
আরএ