পাবনা (ঈশ্বরদী): পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে, এখন চলছে রং-তুলির শেষ আঁচড়ে দেবী দুর্গাসহ অন্যান্য দেব-দেবীর প্রতিমা সাজানোর কাজ।
এবার ঈশ্বরদীতে ৩০টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গোৎসব। খড়, কাঁঠ, সুতা ও মাটির কারুকাজে প্রতিমাগুলো হয়ে উঠছে প্রাণবন্ত। পূজা যত ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততাও তত বাড়ছে। তাদের হাতে দম ফেলারও ফুরসত নেই।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী, ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী ও ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা। কাদামাটি দিয়ে প্রতিমার গহনার নকশায় চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। এরপর শুরু হবে রঙ করার পালা। পাশাপাশি প্রতিটি মন্দিরে সাজসজ্জার কাজও চলছে।
ঈশ্বরদী শহরের ঠাকুরবাড়ি সত্য নারায়ণ বিগ্রহ মন্দিরে সিরাজগঞ্জের জামতৈল থেকে আসা শিল্পী আনন্দ পাল (৪০) বলেন, শিশু বয়সে বাবার সঙ্গে এসে এখানে প্রতিমা তৈরি করতাম। বাবার কাছ থেকেই শিখেছি এ কাজ। এবার ঈশ্বরদীর চারটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পাচ্ছি। তবে বাঁশ, খড় ও মাটির দাম বেড়ে গেছে, প্রতিমার মূল্য তেমন বাড়েনি। তবুও বাবার পেশাকে ভালোবাসা থেকেই এই কাজ করে যাচ্ছি।
ঈশ্বরদী মৌবাড়ি ঠাকুরবাড়ি বারোয়ারী মন্দির কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার কুণ্ডু বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সার্বজনীন উৎসব। উপজেলা প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে। প্রতিটি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঈশ্বরদী শাখার সভাপতি সুনীল চক্রবর্ত্তী বলেন, বিগত ৫৩ বছরে ঈশ্বরদীতে কোনো দুর্গোৎসবে বিঘ্ন ঘটেনি। রাজনৈতিক, সামাজিক ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী সবাই মিলে এই উৎসব পালন করি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার—এই সম্পর্কের কারণেই দুর্গোৎসব সবসময় শান্তিপূর্ণভাবে হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নুর বাংলানিউজকে বলেন, আসন্ন দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পূজা উদযাপন কমিটির সঙ্গে সভা করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
আরএইচ