২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনের অন্তত ৭৮৫ জন ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ)। নিহতদের বেশিরভাগই গাজা উপত্যকার বাসিন্দা, তবে পশ্চিম তীরেও প্রাণ গেছে অন্তত ২৩ জনের।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদলুকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিএফএ’র সহ-সভাপতি সুসান শালাবি। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে ৪৩৭ জনই ফুটবল খেলোয়াড়। এদের মধ্যে পশ্চিম তীর থেকে ছিলেন ১৫ জন।
নিবন্ধিত খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের তথ্য ব্যবহার করে এবং গাজার আঞ্চলিক দফতর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই হিসাব তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে শালাবি সতর্ক করে বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক নিখোঁজ থাকায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। পাশাপাশি অবরোধ ও অব্যাহত বিমান হামলার কারণে অনেক এলাকায় পৌঁছানোও অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
শুধু প্রাণহানিই নয়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের ক্রীড়া অবকাঠামোর বিরাট অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। শালাবির ভাষায়, অন্তত ২৮৮টি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম ও ক্লাব ভবন। ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলোর ২১টি অবস্থিত পশ্চিম তীরে।
পিএফএ-এর পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে—ফিলিস্তিনি ক্রীড়াঙ্গনের ওপর এই ‘ইচ্ছাকৃত হামলা’ বন্ধ করতে হবে এবং গাজা ও পশ্চিম তীরের ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
একইসঙ্গে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৫৬ হাজার ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন আরও ৯৮৬ জন।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে ইসরায়েল বর্তমানে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) বিচারের মুখোমুখি।
এমএইচএম