বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে: ঠিক এক মাস আগে (১৭ নভেম্বর) এই মাঠেই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এক মাস পর একই ভেন্যুতে জয়ের দেখা পেল লাল-সবুজের দল।
২৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতের কেরালায় শুরু হতে যাওয়া সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে এই প্রস্ততি ম্যাচটিতে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের প্রস্তুতির জানানটা ইতিবাচকই দিল বাংলাদেশ দলের নবনিযুক্ত কোচ মারুফুল হকের দল।
সাফ ফুটবলকে সামনে রেখে প্রস্তুতি ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে খেলতে নেমে প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল লাল-সবুজের বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন শাখাওয়াত হোসেন রনি। তার গোলেই জয় নিশ্চিত হয় মামুনুল বাহিনীর।
ম্যাচের শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণের পসরা সাজিয়ে নেপালের সীমানায় কাঁপন ধরায় বাংলাদেশ। সেই ধরাবাহিকতায় প্রথমার্ধের ২ মিনিটেই নেপাল রক্ষণভাগের ডানদিক দিয়ে দারুণ এক আক্রমন রচনা করে মারুফুল হকের শিষ্যরা। কিন্তু অনিল গুরুংদের রংক্ষণদূর্গে সেই আক্রমণ পণ্ড হয়। ১৫ মিনিটে আবার লাল-সবুজ দলের আক্রমণ। কিন্তু ততটা গোছালো না হওয়ায় গোলের মুখ দেখেনি স্বাগতিকরা।
এর ঠিক তিন মিনিট পর মাঠের বাঁ-দিক দিয়ে বেশ গোছালো একটি আক্রমণ রচনা করে মামুনুলরা। এবার অবশ্য কোন ভুল নয়। নেপালের ডি-বক্স সীমানায় গিয়েই দারুণ এক ক্রস তুলে দেন স্বাগতিক ডিফেন্ডার মুন্না, তার সেই ক্রসটিকে লুফে নিয়ে কিছুটা উড়ে গিয়ে হেড করে নেপালের জালে বল জড়িয়ে স্বাগতিকদের উল্লাসের উপলক্ষ এনে দেন শাখাওয়াত হোসেন রনি।
পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফিরতে বাংলাদেশ সীমানায় বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালায় সফরকারী নেপাল। ঠিক তেমনই একটি আক্রমণ ছিল ২৭ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে বল নিজেদের পায়ে নিয়ে বেশ গোছালো একটি আক্রমণে ভাঙতে চেয়েছিল বাংলাদেশের রক্ষণের সুরক্ষিত দেয়াল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হন।
নেপালের উদ্দেশ্য যেখানে সমতায় ফেরা, তেমনি বাংলাদেশে দলের উদ্দেশ্য ছিল ব্যবধান বাড়ানো। সেই লক্ষ্যেই ম্যাচের ৩৯ মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্ট নিখুঁত একটি আক্রমণ নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন নেপাল সীমানায়। গোলরক্ষক তার জায়গা থেকে উঠে এসে হেমন্তকে প্রতিহত করতে চাইলে হেমন্ত গোলবারের উদ্দেশ্যে শট নিলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
ফলে প্রথমার্ধ শেষে ১-০ তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকা নেপাল খেলায় ফিরতে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায়। আর তাদের সে আক্রমণের প্রতিফলন দেখা যায় দ্বিতীয়ার্ধের ৫ মিনিটেই। মাঠের বামদিক দিয়ে বাংলাদেশের সীমানায় আক্রমণ রচনা করে সফরকারীরা। কিন্তু এবারও তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মামনুলদের রক্ষণভাগ।
নেপালের এক-একটি শট যখন বাংলাদেশের গোলবারের বাইরে দিয়ে বা রক্ষণভাগে আটকে যাচ্ছে, তখন দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটে বাংলাদেশ দলের দারুণ একটি আক্রমণে নেপালের জালে বল জড়ান ইয়াসিন খান। ফলে স্বাগতিকদের ২-০তে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও রেফারির নিষেধাজ্ঞায় ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধের ৩০ মিনিটে আরেকবার সমতায় ফেরার আশা জাগিয়েছিলেন নেপাল মিডফিল্ডার অঞ্জন বিসতা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার শটটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। এর নয় মিনিট পর কর্ণার থেকে গোলের সম্ভাবনা জাগান নেপালের মিডফিল্ডার রোহিত চান্দ। কিন্তু বলটি বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা ফিরিয়ে দেন, অবশ্য তার আগেই রেফারি অফ অফসাইড ডেকে বসেন।
এরপর সমতায় ফিরতে আরও কয়েকটি আক্রমণ রচনা করে নেপাল। কিন্তু বাংলাদেশের রক্ষণদূর্গের কৃপায় তাদের প্রতিটি আক্রমণই ব্যর্থতায় পরিণত হয়। অন্যদিকে ব্যবধান বাড়াতে চেষ্টা করে স্বাগতিক বাংলাদেশও। কিন্তু কোনো আক্রমণই তেমন গোছালো না হওয়ায় খেলা শেষে ১-০ এর জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫ আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা
এইচএল/এমআর