ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

অটোরিকশা চালকের মেয়ের স্বর্ণ জয়

মহিবুর রহমান, স্পেশাল করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
অটোরিকশা চালকের মেয়ের স্বর্ণ জয় বাংলাদেশ যুব গেমসে মেয়েদের ৪৮ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণজয়ী নুরজাহান আক্তার ময়না / ছবি: শোয়েব মিথুন - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশ যুব গেমসে খুলনা বিভাগের হয়ে মেয়েদের ৪৮ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণজয়ী নুরজাহান আক্তার ময়নার বাবা পেশায় অটোরিকশা চালক। তাতে যে আয় হয় বাবা-মাসহ ৫ জনের সংসারে টানাটানি আছে বলে তার কথায় মনে হলো না।

বরং একজন দক্ষ ভারোত্তোলক হয়ে উঠতে প্রশিক্ষণ বাবদ যে টাকা প্রয়োজন হয় তার যোগান অটোরিক্সা চালক বাবা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে ময়নার স্বপ্নটাও হয়েছে আকাশছোঁয়া।

দেশের হয়ে অলিম্পিকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়াতে চান বাগেরহাটের এই সোনার কন্যা। তবে শুধু অংশ নেয়াই নয়। সেখানেও স্বর্ণ মুকুট জিততে চান।

আপাতত তার লক্ষ্য একটা চাকুরি, ‘খেলাধুলা করে ডিফেন্সে চাকুরি করতে চাই এটাই আশা। অবশ্যই অলিম্পিকে স্বর্ণ জিততে চাই। ’

যুব গেমসের মতো দেশের ক্রীড়ার এমন মেগা আসরে এবারই প্রথম অংশ নিলেন ময়না। এসেই কাঁপিয়ে দিলেন। বিষয়টা এমন, এলেন দেখলেন জয় করলেন। অভাবনীয় এমন সাফল্যে তাই খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন, ‘অনেক ভালো লাগছে। কি বলবো, ভাবতেও পারিনি স্বর্ণ জিতবো। যেহেতু আমি এই প্রথম গেমসে অংশ নিলাম এবং এখানে দেশের অন্যান্য বিভাগে আমার চাইতে আরও ভালো খেলোয়াড় আছে। ’

ময়না তার অনন্য এই সাফল্যের কারিগর হিসেবে উচ্চারণ করলেন কোচ ও বাগেরহাঁট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের নাম। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ময়নার দেশের বাড়ি বাগেরহাট জেলার গজালিয়া থানায়। তবে থাকেন শহরেই।

সেখানকার স্থানীয় একটি জিমনেশিয়ামে তাকে প্রশিক্ষণ দেন কোচ আনিসুজ্জামান বিল্পব। প্রশিক্ষণ বাবদ যে ব্যয় তার কিছুটা বহন করেন বাবা আর বাকিটা বাগেররহাট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সরকার সেলিম আহমেদ।

‘ক্রেডিট দেব প্রথমেই আমার কোচ আনিসুজ্জামান বিপ্লবকে। তিনি না হলে সম্ভব হতো না। তিনি আমাদের বাগেরহাঁটের একটি জিমে সপ্তাহে দুই তিনদিন প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণের টাকা বাসা থেকে দেয় এবং আমাদের জেলা ক্রীড়া সংস্থা দেয়। সাধারণ সম্পাদক সরকার সেলিম আহমেদ আমাদের টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করেন। ’

ময়না স্বীকার করুন আর নাই করুন। অটোরিক্সা চালিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহের পর  অলিম্পিকে ময়নার স্বর্ণ কন্যার স্বপ্ন পূরণে হয়তো তার বাবা সফল হবেন না। কিন্তু সেলিম আহমেদের মতো দেশের ক্রীড়ার সংগঠকেরা যদি তাদের সাহায্য অব্যাহত রাখেন তাহলে কে জানে সেই অসম্ভব কোনো একদিন সম্ভব হয়ে ধরা দিতেও পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, ১৫ মার্চ ২০১৮
এইচএল/এমঅারএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।