ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

ঈদের ছুটিতে খুলনায় বেড়াতে পারেন যেসব জায়গায়

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
ঈদের ছুটিতে খুলনায় বেড়াতে পারেন যেসব জায়গায়

খুলনা: দরজায় ঈদুল আজহা। ঈদে বাড়তি আনন্দ যোগ করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে আপনার পছন্দের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে।

এবারের ঈদের ছুটি কাজে লাগিয়ে আপনি স্বল্প খরচে ঘুরে আসতে পারেন খুলনার আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে।

১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। এ সময় সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী- খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় এবারের ঈদে ঘুরতে যাওয়ার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে সুন্দরবন।

এদিকে ঈদের আগেই খুলনার বিনোদনকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে অতিথিদের স্বাগত জানাতে। কম সময়ে ও কম খরচে ঘোরার জন্য যেতে পারেন তেমনি কয়েকটি জায়গার কথা জেনে নেওয়া যাক।

বনবিলাস চিড়িয়াখানা ও জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্ক

নিরাপত্তা বেষ্টিত খুলনার একমাত্র চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতা বাঘ, কুমির, হরিণ, বানর, হনুমান, ভল্লুক, অজগর সাপসহ বিভিন্ন পশু-পাখি। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিলাস চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত।

চিড়িয়াখানাটি সেনানিবাসের লোকজন নিয়ন্ত্রণ করছে বলে যাতে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটে না। বনবিলাস চিড়িয়াখানার চারপাশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে লেক, বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে নৌকা ভ্রমণ। জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্কের ভেতরে শিশুদের নানা রকম রাইডও আছে।

ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক

খালিশপুর এলাকার চিত্ত বিনোদনের একমাত্র স্থান ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক। শিশুদের বিনোদনের জন্য এ পার্কে রয়েছে বিভিন্ন রাইড। পার্কটির লেকের পাড়ে নিরিবিলি পরিবেশে আপনিও অবসর কাটাতে পারেন অনায়াসে।

৬ ও ৭ নম্বর ঘাট

খুলনা মহানগরের কোলঘেঁষে ভৈরব নদের ৬ ও ৭ নম্বর ঘাট এলাকা এখন দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। যা রাজশাহীর পদ্মার পাড়ের মতো চিত্ত-বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় ততই বাড়ছে এক সময়ের খুনি এরশাদ শিকদারের আতঙ্কের এ ঘাট এলাকায়। নদীর পাড়ে দৃষ্টিনন্দন বেঞ্চে বসে নদীর সুন্দর ও নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করা সম্ভব।



প্রেমকানন

নগরের জোড়া গেট এলাকায় অনেকটা নির্জন পরিবেশ প্রেমকাননে। এ পার্কে ঈদের ছুটিতে সপরিবারে অনেকেই ঘুরতে আসেন।

শহীদ হাদিস পার্ক

শহীদ হাদিস পার্ক বিভাগীয় শহর খুলনার বাবুখান রোডে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক পার্ক, যা ১৮৮৪ সালে খুলনা মিউনিসিপ্যাল পার্ক প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যুত্থানে শহীদ শেখ হাদিসুর রহমান বাবুর নামে নামকরণ করা হয়। শহীদ হাদিস পার্কে ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অনুকরণে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। হাদিস পার্কে রয়েছে বিশাল লেক। লেকের ওপর শহীদ মিনার ও পানির ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও শহীদ হাদিস পার্কে নির্মিত পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে এক নজরে খুলনা শহরটাকে দেখা যায়।

খানজাহান আলী (র.) সেতু (রূপসা সেতু)



নান্দনিক সৌন্দর্য ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর কারণে রূপসা সেতু বরাবরই খুলনার মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বাংলাদেশের যতগুলো সেতুর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি সেতু হচ্ছে খানজাহান আলী সেতু। বেশিরভাগ মানুষের কাছে খানজাহান আলী সেতু রূপসা সেতু নামে পরিচিত। মূলত এই সেতুর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দুই প্রান্তের দুটি করে চারটি সিঁড়ি রয়েছে। আর এ সব সিঁড়ির সাহায্যে সেতুতে ওঠানামা করা হয়। বর্তমান সময়ে এ সেতুটি দেশের মানুষের কাছে একটি দর্শনীয় সেতু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

প্রতি ঈদে মানুষের ঢল নামা খানজাহান আলী (র.) সেতু পাদদেশে রয়েছে বিনোদনের চমৎকার পরিবেশ। এখানে বসবে ঈদ মেলা। সপ্তাহব্যাপী এ মেলায় হরেক রকমের পণ্য দেখা যাবে। ভয়ানক ডাইনোসরের কথা মনে পড়ে নগরীর মুজগুন্নী পার্কে গেলে। প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রই ঈদ উপলক্ষে সেজেছে নতুন রূপে।

জাতিসংঘ শিশুপার্ক

খুলনা মহানগরীর শান্তিধাম মোড়ের কাছে জাতিসংঘ শিশু পার্কটি অবস্থিত। পার্কটির একদিকে খানজাহান আলী রোড আর একপাশে ইসলামপুর রোড। শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্কটিতে রয়েছে দোলনাসহ বেশ কিছু রাইড। খুলনার প্রাণকেন্দ্রের এই পার্কটি সারা বছর সরব থাকে শিশুদের কলকাকলিতে।

ভূতের আড্ডা

বটিয়াঘাটার মাথাভাঙ্গা এলাকায় রূপসা রিভার পার্ক অ্যান্ড ভূতের আড্ডা অবস্থিত। যেখানে রয়েছে ভূতের আকৃতির সঙ্গে আওয়াজ। পাশে কবুতর, তুত পাখি, চিনা হাঁস এবং বানর। পার্কের সব স্থানে কিছুক্ষণ পর পর দেখা মিলবে ৪ ফিট লম্বা বাঘের ড্রেসে মুখোশধারী ভূতের সঙ্গে।

শেখ রাসেল ইকোপার্ক

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মাথাভাঙ্গা মৌজায় অবস্থিত শেখ রাসেল ইকো পার্ক অবস্থিত। সুন্দরবনের আদলে তৈরি করা হয়েছে পার্কটি। এখানে গেলেই দেখা মিলবে পাখির অভয়ারণ্য, উপকূলবর্তী সুন্দরবনের গাছপালাসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার প্রজাতির গাছ।

রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক

খুলনার বটিয়াঘাটার পশুর নদের অববাহিকায় তৈরি করা হয়েছে ‘রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক’। খুলনা শহরের অদূরে রানা রিসোর্টের অবস্থান হওয়ায় খুলনাবাসীর জন্য এটাই আদর্শ দর্শনীয় স্থান।

ভ্রমণপিয়াসীদের জন্য এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক কটেজ, আধুনিক ও জনপ্রিয় রাইড সম্বলিত অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও ওয়াটার কিংডম। এই পার্কে বিশেষ আকর্ষণ সুনামিপুল যা বাংলাদেশে প্রথম, যেখানে কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং ওয়াটার স্লাইড ও ডিজে মিউজিক এবং বিভিন্ন আকর্ষণীয়  রাইড ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকছে। এর ঢেউ হবে সাড়ে ৪-৫ ফুট।

বিশেষ করে শিশুদের আনন্দের জন্য এ পার্ককে বলা যেতে পারে ‘শিশু স্বর্গ’। ৯ দশমিক ২৫ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এই অসাধারণ অ্যামিউজমেন্ট পার্কটিতে থাকছে ক্যারোসেল, অক্টোপাস রাইড, নাগরদোলা, বাম্পার কার, সেল্ফ কন্ট্রোল্ড প্লেন, ট্রেন, ফ্লাইং কার, জাম্পিং ফ্রগ, লেডি বাগ, মটর রাইড, ক্যাবল কার, সুনামিপুল, ওয়াটার স্লাইড রাইন্ড।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২৩
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।