ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পর্যটন

টানা ৩ দিনের বন্ধে পর্যটকের সমাগম বান্দরবানে

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
টানা ৩ দিনের বন্ধে পর্যটকের সমাগম বান্দরবানে

বান্দরবান: টানা তিন দিনের (১৭-১৯ মার্চ) সরকারি ছুটিকে কেন্দ্র করে বান্দরবানে হাজারো পর্যটক সমাগম হয়েছে। জেলার বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলের পাশাপাশি এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর পর্যটন স্পটগুলো।

 

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, শুক্রবার (১৮ মার্চ) সাপ্তাহিক ছুটি ও শনিবার (১৯ মার্চ) পবিত্র শবে বরাত সরকারি ছুটি থাকায় টানা ছুটির কবলে পড়ে দেশ।

এদিকে পর্যটকদের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ভ্রমণের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন।  

জেলার প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রজুড়ে এখন ভ্রমণ করছেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক। মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিক লেক, শৈল প্রপাত, চিম্বুক, নীলগিরিসহ প্রতিটি পর্যটন মুখরিত পর্যটকদের কোলাহলে। পাহাড়, নদী আর ঝিড়ি-ঝর্ণার অপরূপ রূপ দেখে বিমোহিত প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা।  

ঢাকা থেকে বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে এসেছেন আফিয়া রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানের প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর। আর এই পাহাড় ও প্রকৃতি দেখতে সুযোগ পেলেই বান্দরবান ছুটে আসি। যেকোনো বন্ধ পেলেই আমি বান্দরবান ভ্রমণ করতে প্রস্তুত হয়ে যাই।



নীলফামারী থেকে বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. রায়হান বলেন, ১৭, ১৮, ১৯ তিন দিনের সরকারি ছুটি পেয়ে বান্দরবান ঘুরতে এলাম, আর এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে বেশ মজা পাচ্ছি।

নীলাচল পর্যটন স্পটের টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা সুমি ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, নীলাচলে শুধু ১৭ মার্চ একদিনে প্রায় তিন হাজার পর্যটকের সমাগম হয়েছে। আর তাদের সেবা দিতে আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে, টানা তিন দিনের বন্ধে বান্দরবানের বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর হয়ে উঠেছে। আর পর্যটকদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে কাজ করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।  

বান্দরবানের আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানে ভালো মানের হোটেল রির্সোট তৈরির কাজ চলছে। একইসঙ্গে জেলায় আগত সব পর্যটকদের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিতে আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি কাজ করে যাচ্ছে।

বান্দরবান মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপভ্যান মালিক সমিতির লাইন পরিচালক মো. কামাল বলেন, টানা তিন দিনের বন্ধে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক এসেছে। আর এদের বেশিরভাগ খুব ভোরে আমাদের পর্যটকবাহী গাড়িগুলো নিয়ে রোয়াংছড়ি, থানচি আর নীলগীরির ভ্রমণের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এদিকে আমাদের বেশিরভাগ গাড়িই বুকিং হয়ে গেছে।

শান্তি ও সম্প্রীতির শহর বান্দরবান। মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য, বিশাল পাহাড়, ১২টি জাতিগোষ্টির সহঅবস্থান আর লোভনীয় পর্যটন স্পটের কারণে প্রতিনিয়তই পর্যটকেরা ভিড় জমায় এই জেলায়। আর পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় সর্বদাই প্রস্তুত প্রশাসন- এমনটাই জানালেন সংশ্লিষ্টরা।



ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোনের ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে  বলেন, বান্দরবানে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে।  

তিনি বলেন, ভ্রমণের পাশাপাশি পর্যটকদের সর্তক থাকতে হবে, ছোট বাচ্চাদের নিজের সঙ্গে রাখা এবং যেকোনো পর্যটন স্পট ভ্রমণের সময় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত।  

বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়েসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য জেলা প্রশাসন সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। বিশেষ করে পর্যটকরা বেড়াতে এসে যাতে কোনো ভোগান্তিতে না পড়েন, সেদিকে নজরদারি করছে প্রশাসন।  

তিনি বলেন, পর্যটকরা যাতে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারেন, তার জন্য আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম সার্বক্ষণিক হোটেলগুলো পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি সচেতনও করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।