ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

মোহনীয় সব সৈকত

মাহবুব আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৪
মোহনীয় সব সৈকত

আপনি কী প্রকৃতি প্রেমী? যদি তাই হন, তাহলে কী কল্পনায় কখনো আপনার প্রিয়জনকে নিয়ে কোনো সৈকতে হাতে হাত রেখে হেঁটেছেন? তাকে বলেছেন, হৃদয়ের না বলা কথা কিংবা রোমান্সে বোনা স্বপ্নের কথা।  

এ ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের জায়গা হতে পারে ভারতের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতগুলো।

দেশটির বিশাল তটরেখা জুড়ে  রয়েছে মোহনীয় সব সৈকত, আপনার অবকাশ যাপনের উত্তম স্থান হতে পারে জায়গাগুলো।

ইয়ারদা সৈকত


আপনি কী কখনও কাউকে বলতে শুনেছেন? ‘আম‍ার সূর্য, বালি এবং সমুদ্র প্রয়োজন! তাই আমি অন্দ্রপ্রদেশ যাচ্ছি। ’

সেখানে গোয়ার মতো বার-ক্লাব কিংবা কেরেলার মতো পাঁচ তারকা হোটেল-রিসোর্ট না থাকলেও রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তটরেখা। আছে সৈকত নিকটবর্তী দেশের সর্ববৃহ‍ৎ রাস্তা।

অন্ধ্র প্রদেশের সৈকতের নিরবচ্ছিন্ন তটরেখা সৌন্দর্য উপভোগের জন্য খুবই আকর্ষণীয়। এখানকার সাদামাটা তটরেখার আদিম সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে।

তিন দিক থেকে পাহাড় বেষ্টিত সৈকতের সোনালি বালি বঙ্গোপসাগরের জলের সঙ্গে একটি ভাঁজ সৃষ্টি করেছে। যা সত্যিই মুগ্ধ হওয়ার মতো।

মনের মানুষকে নিয়ে রোমান্সে হারিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ উপযোগী অন্দ্র প্রদেশের ভিসাখাপাটনাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দ‍ূরে অবস্থিত ইয়ারদা সৈকত।

আগোন্ডা সৈকত, গোয়া


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বর্গভূমি হিসেবে পরিচিত ভারতের গোয়া। দীর্ঘ ও পরিচ্ছন্নতার জন্য বেশ খ্যাতি আছে আগোন্ডা সৈকতের। দীর্ঘ ও প্রসারিত এই সৈকতে রয়েছে ঘুরে বেড়ানোর শান্ত ও মনোরম পরিবেশ।
 
অনেকেই অবকাশ যাপন ও প্রিয়জনের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে এবং প্রকৃতির নিস্তব্ধতা অবলোকন করতে ছুটে যান এই সৈকতে।

এখানে মনমতো সুভেনিয়র স্টল ও রেস্তোরাঁ মিলবে অনায়াসেই। দক্ষিণ গোয়ার পালোলেম সৈকতের ঠিক উত্তরে অবস্থিত আগোন্ডা।

মারগাঁও থেকে ৪৩ কিলোমিটার (২৬ মাইল) এবং পানাজি থেকে ৭৬ কিলোমিটার (৪৭ মাইল) দূরে অবস্থিত মনোরম এই সৈকত।

লাইটহাউজ সৈকত, কোভালাম, কেরেলা


কেরেলা রাজ্যের কোভালাম সৈকতের পুরাতন ভিজহিনজাম লাইটহাউজ বা বাতিঘর অবস্থিত।  

রাতে এই সৈকতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের মোহনীয়তা আপনাকে আবিষ্ট করবে। কোভালাম ভারতের ষাট দশকের বিখ্যাত পর্যটন স্পটগুলোর একটি। বলা যেতে পারে রোমান্সের জন্য এটি আকর্ষণীয় স্থান।

তবে এটা এখনও উচ্চবিত্ত বিশেষ করে ইউরোপ ইসরায়েলের পর্যটকদের দখলেই রয়েছে।

বঙ্গরাম সৈকত, লাক্ষাদ্বীপ


বঙ্গরাম দ্বীপের বিশুদ্ধ বালি এবং দিগন্ত বিস্তৃত জোৎস্না রাতের দৃশ্য অবিস্মরণীয়।

ডাইভিং, স্নরকেলিং, পালতোলা এবং গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাসহ বিভিন্ন দুঃসাহসিক জলকেলিতে মেতে উঠতে পারেন পর্যটকরা।

বাজেট অনুযায়ী এখানে থাকার ব্যবস্থাও মন্দ নয়। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এখানে অবকাশ যাপন করেছেন। এখন রাহুল গান্ধীও সুযোগ পেলেই ছুটে যান এ সমুদ্র সৈকতে।

‍রাধানগর সৈকত, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ


সৌন্দর্যের জন্য রাধানগর সৈকতকে টাইম ম্যাগাজিন এশিয়ার সেরা সৈকত হিসেবে মনোনীত করেছে। যা হেভলক ফেরি ঘাট থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে আন্দামান দ্বীপের প্রশান্ত এলাকায় অবস্থিত।

চিকচিকে সাদা বালি, নীলাভ জলের মনোরম দৃশ্য এক রোমাঞ্চকর রাজ্যে নিয়ে যাবে পর্যটকদের।

নাগোয়া সৈকত, দিউ


অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর প্রাচীন দুর্গ, পর্তুগিজ চার্চ ও পুরনো মন্দির নিয়ে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় দ্বীপ হচ্ছে ভারতের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল দিউ।

হিন্দু আর সুলতানি শাসনের পর ষোড়শ শতকে পর্তুগিজদের দখলে চলে যায় এই অঞ্চল। পর্তুগিজ শাসনের স্মৃতির সাক্ষী হয়ে প্রাচীন দুর্গ বা চার্চগুলোর মতোই যেন রয়ে গেছে হোকা গাছগুলি।

দিউয়ের কাছাকাছি পৌঁছতেই রাস্তার দু’পাশে হোকা গাছ নজরে পড়ে। সমুদ্র সৈকতের পথেও রয়েছে হোকার ঝোপ। বহুশাখার এই তালজাতীয় গাছটি আফ্রিকা থেকে দিউতে এনেছিল পর্তুগিজরা।

ঘোঘলার ব্রিজ পার হয়ে শহরে ঢুকে পড়া যায়। ঘোঘলার জেটির ধারে জলে ভাসে রঙিন রঙিন নৌকো। সামনে জলের মধ্যে দ্বীপের ওপর একটি ছোট দুর্গ এবং একটু দূরে তীরের গায়ে ১৫৩৫-১৫৪১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তৈরি হওয়া বিশালাকার দুর্গ প্রাসা-ডি-দিউ।

প্রাচীন এই দুর্গকে তিন দিক দিয়ে ঘিরে রেখেছে আরব সাগর আর ব্যাকওয়াটার। ঘিরে রেখেছে দুর্গের বিশাল প্রাচীর, দীর্ঘ পরিখা।

দিউয়ের সমুদ্র তীর ঘেষে রয়েছে প্রাচীন হিন্দু মন্দিরগুলো। যা অপরূপ সুন্দর নাগোয়া সৈকতকে আরও মাধুর্যময় করে তুলেছে।  

সিরিনিটি সৈকত, পন্ডেচিরি


অসাধারণ সুন্দর শহর পন্ডেচিরিতে বিদেশিদের আকৃষ্ট করার মতো সিরিনিটি একটি উল্লেখযোগ্য সৈকত। এই অদূষিত সৈকতটি শহরের উত্তর থেকে ১০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত।

এ সৈকতে প্রচুর দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। অনেকেই প্রিয়জনকে নিয়ে হারিয়ে যান সৈকতের সৌন্দর্যে।

চারপাশের পামগাছ সৈকতের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রিয় পাঠক, ভ্রমণ যাদের নেশা, বেড়ানোর সুযোগ এলে যারা উড়িয়ে দেন সব বাধা, কাজের অংশ হিসেবে যারা ভ্রমণ করেন কিংবা যাদের কালেভদ্রে সুযোগ হয় ভ্রমণের তারা সবাই হতে পারেন ট্রাভেলার্স নোটবুক’র লেখক। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন বাংলানিউজের পাঠকদের সঙ্গে।

আর একটা কথা লেখার সঙ্গে ছবি পাঠাতে ভুলবেনই না, সেই সঙ্গে বাতলে দিন সেখানে যাওয়ার পথঘাটের বিবরণও।  

প্রিয় পাঠক, আপনার ভ্রমণ আনন্দ বিশ্বজুড়ে বাঙালির কাছে ছড়িয়ে দিতে আমাদের ই-মেইল করুন-[email protected] এই ঠিকানায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।