ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

বঙ্গোপসাগরে এক টুকরো ইউরোপ!

উর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৫
বঙ্গোপসাগরে এক টুকরো ইউরোপ!

ঢাকা: প্রমোদতরীর কথা এলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইউরোপীয়ানদের ইতিহাস। যাত্রীসেবার মান অক্ষুণ্ন রেখে বিশ্বজুড়ে সুনাম ধরে রেখেছে মহাদেশটি।

 

এবার প্রমোদতরীর ইতিহাসে পা রাখতে যাচ্ছে বাংলাদেশও। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করবে বাংলাদেশের যাত্রীবাহী জাহাজ। ইউরোপীয় প্রমোদতরীর আদলেই সব ধরনের সেবা যাওয়া যাবে এখানে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী প্রথম বাংলাদেশি যাত্রীবাহী জাহাজটি হবে আটতলা। বলতে গেলে একটা ছোটখাট শহর!

কী নেই সেখানে! রেস্টুরেন্ট, শপিং মল, স্পা, কনফারেন্স রুম, সিনেপ্লেক্স, প্লে-গ্রাউন্ডসহ পশ্চিমা প্রমোদতরীর সব সুবিধাই থাকছে ওই জাহাজে।

ইচ্ছে করলেই যাত্রীরা ঘুরতে পারবেন জাহাজের ভেতরের শপিং মলে। সেখানে পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সব ধরনের জিনিসপত্র।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের জন্য প্রথম প্রমোদতরীটি আনছে দেশীয় কোম্পানি আফরোজ শিপিং লাইন। ডেনমার্কের স্বনামধন্য জাহাজ কোম্পানি জেমিনির এই প্রমোদতরী দেশে আনার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, জাহাজে যাত্রীদের সেবার লক্ষ্যে পাঁচটি রেস্তোরাঁ থাকবে। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে শিপিং লাইনের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকবে।

‘সমুদ্রপথে আমরা বেশ কয়েকটি দেশে যাত্রী বহন করবো। আর এ সময় যেন নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমাদের নিজেদের প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাবাহিনী থাকবে জাহাজটিতে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলছিলেন আফরোজ শিপিং লাইনের প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট নিয়েও।

বললেন, ‘২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ বিশাল জলসীমা অর্জন করে ঠিক তখন থেকেই সমুদ্রে দেশীয় অর্থনীতি কর্মকাণ্ড কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, তা নিয়ে ভাবছিলাম। সেই ভাবনা থেকেই আফরোজ শিপিং লাইনের যাত্রা শুরু হয়।

আফরোজ শিপিংয়ের এমডি জানান, জাহাজের নিজস্ব সিনেপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৫০০ দর্শক সিনেমা দেখতে পারবেন। দিনে মোট চারটি সিনেমা দেখানো হবে ওই সিনেপ্লেক্সে।

আলাপচারিতায় আফরোজ শিপিং লাইনের চেয়ারম্যান মাকসুদা আফরোজ চৌধুরী বলেন, স্পা ও বিউটি পার্লারেও মানসম্মত এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাওয়া যাবে। এর দায়িত্বে থাকছে থাইল্যান্ডের ‘সিয়াম গ্রুপ’।  

এরইমধ্যে থাইল্যান্ডের ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী জাহাজের যাত্রীদের স্পা ও বিউটি পার্লারের সেবাগুলো দেবে সিয়াম গ্রুপ। কোয়ালিটিতে কোনো ছাড় দেবো না আমরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাহাজটিতে দু’টি সুইমিং পুলও থাকছে।   সুইমিংপুল যাত্রীসেবায় ২৪ঘণ্টা উন্মুক্ত থাকবে। যেসব যাত্রী পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করবেন তাদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকছে প্লে-গ্রাউন্ড।

ছোট ছেলে-মেয়ের কথা বিবেচনা করে জাহাজে এ প্লে-গ্রাউন্ড রাখা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

তারা জানান, সমুদ্রপথে জাহাজ পরিচালনার জন্য থাকছেন প্রায় ৯৫ জন ক্রু। এতের বেশিরভাগই বিদেশি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

জাহাজটির চারশ’ কক্ষে প্রায় এক হাজার যাত্রী বঙ্গোপোসাগরসহ ছয়টি দেশে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, মালদ্বীপে অনায়েসেই ভ্রমণ করতে পারবেন যাত্রীরা।

চলতি বছরের অক্টোবরে জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে যাত্রা শুরু করবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির এমডি শাহ মমিনুল ইসলাম চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৫
ইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।