ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

মুক্তাগাছা রাজবাড়ির গেট বন্ধ, ফিরে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫
মুক্তাগাছা রাজবাড়ির গেট বন্ধ, ফিরে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মুক্তাগাছা রাজবাড়ি, ময়মনসিংহ থেকে : রাজা-জমিদারদের তীর্থ ভূমি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা। এ উপজেলার রাজবাড়িতে পর্যটকদের রয়েছে দুর্নিবার আকর্ষণ।

জমিদারী যামানার স্মৃতি বিজড়িত এ রাজবাড়ি দেখতে প্রতিদিন ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা এখানে এসে ভিড় করেন।
 
কিন্তু হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এ রাজবাড়িতে প্রবেশের গেট। স্থানীয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক কনস্টেবলকে তুচ্ছ ঘটনায় বখাটেদের মারপিটের জের ধরে বন্ধ রয়েছে এ গেট। সেখানে তালা ঝুলছে।

ফলে নান্দনিক স্থাপনা শৈলীর অনুপম নিদর্শন এ ঐতিহাসিক বাড়িটি ঘুরেফিরে দেখা থেকে বঞ্চিত হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের।

ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরবর্তী উপজেলা মুক্তাগাছার রাজবাড়ি এলাকায় মঙ্গলবার (০৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এমন ঘটনা চোখে পড়ে। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক এ রাজবাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েও শুধু সিকিউরিটি গার্ড আলাল (২৮) ছাড়া অন্য কাউকে পাওয়া গেলো না। অথচ কাগজ-পত্রে এ রাজবাড়িটি দেখভাল করতে রয়েছেন ৪ কর্মচারী।

স্থানীয় শহীদ স্মৃতি কলেজ লাগোয়া এ রাজবাড়ির ঠিক সামনেই একটি চা দোকান। সেখানে বসেই গালগপ্প করছিলেন রাজবাড়ির সিকিউরিটি গার্ড আলাল (২৮)। গেট বন্ধ কেন, প্রশ্ন করতে আলাল জানান, রাজবাড়ির ভেতরে বসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অহেতুক স্থানীয় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এক সদস্যকে মারপিট করেন স্থানীয় কয়েক বখাটে।

এরপর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই বন্ধ রয়েছে রাজবাড়ির গেট। কেউ এলে এ গেট না খুলতে বলে গেছেন কেয়ার টেকার রশিদ মিয়া।

কেয়ার টেকার রশিদ কোথায়, জানতে চাইলে আলাল বলেন, সকাল থেকেই রশিদ নেই। তার মোবাইলও বন্ধ রাখছে। কখন আসবে জানি না।

বিভিন্ন স্থান থেকে রাজবাড়িতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা সামনের সেলিমের চা দোকানে বসে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পিয়াস, সিয়াম, রনি, তুহিন, আরিফ ও বাপ্পি।

তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস হচ্ছে না। তাই ঘুরতে এসেছেন। কিন্তু এসেই উল্টো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দুঘণ্টা ধরেত বসে থাকলেও ভেতের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। অনেকেই বিরক্ত হয়ে ফিরে গেছেন।

আর চা দোকানি সেলিমের ভাষ্যে, গণ্ডগোলের পর থেকে কাউকে রাজবাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। মেলা লোক আইসা ঘুইরা যাইতাছে।

এ বিষয়ে সরেজমিনে জানতে মুক্তাগাছা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) কার্যালয়ে গেলে গেটে দাঁড়ানো আসাদ নামের দুই কনস্টেবল জানান, এসপি স্যার কাল চলে যাচ্ছেন। বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে সবাই ব্যস্ত। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না।

রাজবাড়ির গেট আপনাদের নির্দেশে বন্ধ কী- এর জবাবে কনস্টেবল আসাদ বলেন, গতকাল (সোমবার) গণ্ডগোল হয়েছিল। এক কনস্টেবলকে বখাটেরা মেরেছিল। এখন সব মিটমাট হইছে। গেট বন্ধ কেন এইটা আমরা জানি না।

প্রসঙ্গত, মুক্তাগাছায় ছিলেন ষোল হিস্যার জমিদার। ১৬ জন জমিদার এ অঞ্চল শাসন করতেন। মহারাজ সূর্যকান্ত আচার্য্য চৌধুরী ছিলেন এর মধ্যে অন্যতম। তারই দত্তক পুত্র ছিলেন মহারাজ শশীকান্ত আচার্য্য চৌধুরী। ঐতিহাসিক এ বাড়িটির কয়েকটি ভবন সম্প্রতি কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫
জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।