ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

সৈকত, সাগর আর পাহাড়ের দেশ...

তুষার তুহিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৫
সৈকত, সাগর আর পাহাড়ের দেশ... ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কক্সবাজার: একদিকে বিশাল সাগর, অন্যদিকে দিগন্ত ছোয়া উঁচু উঁচু পাহাড়। এর পরতে পরতে অপূর্ব সবুজের সমারোহ।

কোথাও কোথাও বয়ে চলেছে ঝর্ণাধারা। রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশনও। যেন সৃষ্টিকর্তার নিজ হাতে গড়া এক নৈসর্গের নগরী।

বলা হচ্ছে অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজারের কথা। পৃথিবীর সর্বচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের কক্সবাজারকে দেখে মুগ্ধ হবেনা এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

রূপসী বাংলার সব রূপের সরব উপস্থিতি এই কক্সবাজারে। সূর্যস্নান কি সমুদ্রস্নান, খোলা জিপে বা ঘোড়ায় সৈকতে বেড়ানো, সমুদ্রের বালিয়ারিতে শামুক-ঝিনুকের সঙ্গে লুকোচুরি কত কি।

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থানসমূহ-

সমুদ্র সৈকত
১২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। নাজিরার টেক থেকে শুরু করে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত এর বেলাভূমি। এর মধ্যে লাবনী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, ডায়বেটিক হাসপাতাল পয়েন্ট অন্যতম।

হিলটপ সার্কিট হাউস
জেলা পরিষদ ভবনের পশ্চিম দক্ষিণে পাহাড়ের চূঁড়ায় মনোরম পরিবেশে হিলটপ সার্কিট হাউসের অবস্থান। এর চূঁড়া থেকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ ও পুরো শহর অবলোকন করা যায়।
 
রাডার স্টেশন
হিলটপ সার্কিট হাউসের দক্ষিণ পাশের চূঁড়াতে কক্সবাজার রাডার স্টেশন। এখান থেকেই দেশব্যাপী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। রাডার যন্ত্রটি সুইডিশ শিশুকল্যাণ সংস্থা ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় ১৯৬৮ সালে স্থাপন করা হয়। পরে জাপান সরকারের আর্থিক সহায়তায় তা আধুনিকীকরণ করা হয়।

লাইট হাউস   
রাডার স্টেশনের দক্ষিণে আরেক পাহাড়ের চূঁড়ায় এর অবস্থান। এর ‍সাহায্যে গভীর সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ ও অন্যান্য নৌযান দিক নির্দেশনা পায়।

প্যাগোডা (জাদী)
১৭৯০ সালের দিকে বার্মিজরা আরাকান বিজয়ের পর কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় এটি নির্মাণ করেন। তারা এটিকে স্মৃতিচিহ্ন বলেন। কক্সবাজার সদর, রামু ও টেকনাফের পাহাড় বা উঁচু টিলায় এ ধরনের প্যাগোডা দেখা যায়।

আগ্গ মেধা বৌদ্ধ ক্যাং
কক্সবাজার সদরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭টির মতো বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। এর মধ্যে আগ্গা মেধা ক্যাং ও মাহাসিংদোগীক্যাং সবচেয়ে বড়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা ও বিষু উৎসব এসব ক্যাংয়ে উদযাপন হয়।
 
শুটকি মহাল (জিরো পয়েন্ট)
এখানে বঙ্গোপসারে থেকে আহরিত মাছকে প্রাকৃতিক উপায়ে শুকানো হয়। স্থানটি নাজিরার টেক নামে পরিচিত এবং এটি কক্সবাজারের জিরো পয়েন্ট।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র
বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত মাছ এখানেই নামানো হয়। পরে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পাঠানো হয়। বাঁকখালী নদীতীরে অবস্থিত এ স্থানটি কক্সবাজারের মাছের প্রধান আড়ত।
 
লবণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা   
ইসলামপুর, নাপিতখালী এলাকা থেকে বাংলাদেশের চাহিদার ৮৫ ভাগ লবণ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন হয়ে থাকে। কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান।

বার্মিজ মার্কেট
রাখাইন রমণীদের দ্বারা পরিচালিত বিভিন্ন রকম হস্তশিল্প ও মনোহরি পণ্যের দোকান।

ঝিনুক মার্কেট
ঝিনুক শিল্পের রকমারি জিনিসপত্রের প্রধান বিক্রয় ও বিপণন কেন্দ্র। এর অবস্থান প্রধান সড়কে হোটেল হলিডে মোডের পশ্চিমে। তবে সমুদ্র সৈকতেও শামুক-ঝিনুকের বিভিন্ন পণ্যের দোকান রয়েছে।

রামুর দর্শনীয় স্থানসমূহ-

হিমছড়ি
কক্সবাজার থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিমছড়ি। এর দুই কিলোমিটার আগে দেখা মিলবে দরিয়ানগরের। যেখানে পাহাড়ের সঙ্গে সাগর মিশেছে। হিমছড়ি যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক ঝর্ণাও রয়েছে।

কক্সবাজার শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়কে সমুদ্র আর পাহাড়ের মধ্য দিয়ে জিপে বা প্রাইভেটকারে করে যাওয়া যায়  হিমছড়িতে।

রামকোট তীর্থধাম
রামকোট বনাশ্রমের পাশের পাহাড়ের চূঁড়ায় অবস্থিত। ৯০১ বঙ্গাব্দে স্থাপিত। কথিত আছে রাম-সীতা বনবাসকালে এই রামকোটে অবস্থান করেছিলেন। তীর্থধামে মন্দিরের পাশাপাশি আলাদা একটি বৌদ্ধ বিহারে ধ্যানমগ্ন ছোট একটি বৌদ্ধমূর্তিও রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, দুই ধর্মের সহাবস্থানের প্রমাণ স্বরূপ সম্রাট অশোকের সময়ে এই মূর্তি স্থাপিত হয়।

ছেংখাইব ক্যাং
রামুর শ্রীকুলে বাঁকখালী নদীর তীরে ছেংখাইব ক্যাং (বৌদ্ধ বিহার) অবস্থিত। এ বিহারে নানা নকশাখচিত আসন ও কাঁচের পাত্রে সংরক্ষিত ১০টিরও বেশি পিতল এবং অনেক শ্বেতপাথরের মূর্তি রয়েছে। সব মিলে রামু থানায় ২৩টি বৌদ্ধ বিহারে শতাধিক মূল্যবান বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।
 
আঁধার মানিক
রামু থানার কাউয়ার খোপ ইউনিয়নে উখিয়ার ঘোনায় একটি রহস্যময় গর্ত আছে। যার শেষ কোথায় কেউ জানে না। এ গর্তকে নিয়েও রয়েছে অনেক কিংবদন্তী। স্থানীয় জনগণ এটিকে ‘আঁধার মানিক’ হিসেবে ডাকে।

লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার
ফতেখাঁর কুল ইউনিয়নে লামারপাড়া গ্রামে এ বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান। এ বিহারের পিতলের বৌদ্ধ মূর্তিটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি।

রামকোট
রামুর রাজারকুল ইউনিয়নে পাহাড়ের চূঁড়ায় রামকোট বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। এটি খ্রিস্টপূর্ব ৩০৮ সালে নির্মিত বলে জানা  গেছে। কলিঙ্গ যুদ্ধের পর সম্রাট অশোক অস্ত্র ত্যাগ করে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়ে এ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। রামকোট বনাশ্রমে ছোট-বড় আরও বেশকিছু বৌদ্ধমূর্তি রয়েছে।

রাবার বাগান
কক্সবাজারে অন্যতম প্রাকৃতিক নিদর্শন রামুর রাবার বাগান।   ২৮ হাজার ৮৮৬ একর জায়গার উপর বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থার পরিকল্পনায় স্থাপিত এ রাবার বাগান দেশের সর্ববৃহৎ।
 
নাইক্ষ্যংছড়ি লেক ও ঝুলন্ত ব্রিজ
এটি একটি প্রাকৃতিক জলাশয়। পাহাড়ের পাদদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সমাহার। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এর উপর ঝুলন্ত ব্রিজ রয়েছে। কক্সবাজার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ির দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার।

আইসোলেটেড নারকেল বাগান
রামু-চৌমুহনী থেকে দক্ষিণে ৫ কিলোমিটার দূরে রাজারকূলের পাহাড়ে ২৫০ একর জায়গায় এটি অবস্থিত। বাগানটি ‘এ’ এবং ‘বি’ ব্লকে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ব্লকে ৪টি করে সাব ব্লক রয়েছে। বাগানে নারকেল গাছের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার ১১২টি।

উখিয়ার দর্শনীয় স্থানসমূহ-

ইনানী
পাথর আর নীল জলরাশির স্নাত ইনানী সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের গর্জন, পাখির কূজন ও পাহাড়ি ঝর্ণারধ্বনির অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছে এখানে।   সুপারি গাছের ছায়াঘেরা ইনানীতে যেতে হলে কক্সবাজার থেকে উখিয়া কোটবাজার হয়ে জিপে পশ্চিমে প্রায় তিন মাইল যেতে হবে।   ইনানীতে বন বিভাগের একটি ডাকবাংলো রয়েছে। রয়েছে ইনানী বিচ রিসোর্ট নামে একটি অবসর যাপন কেন্দ্রও। কক্সবাজার থেকে এর দূরত্ব ৩৩ কিলোমিটার।
   
কানা রাজার সুড়ঙ্গ
উখিয়া থানার জালিয়া পালং ইউনিয়নে পাটুয়ার টেক সৈকতের কাছে নিদানিয়া পাহাড়ের মধ্যে এ সুড়ঙ্গের অবস্থান। একটি বড় আকারের ট্রাক অনায়াসে এর মধ্যে ঢুকে যেতে পারে। কথিত রয়েছে মগ সম্প্রদায়ের এক চোখে বন্ধ রাজার আমলে আত্মরক্ষার জন্যে এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হয়েছিল।
    
চকরিয়ার দর্শনীয় স্থানসমূহ-

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক চকরিয়ার ডুলহাজারায় অবস্থিত । এর আয়তন ৯০০ হেক্টর। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্ব পাশে ডুলাহাজারা রিজার্ভ ফরেস্টে এ পার্কটি অবিস্থত। কক্সবাজার থেকে উত্তর দিকে ৫০ কিলোমিটার ও চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১০ কিলোমিটার দূরে এ পার্কের অবস্থান।

পার্কের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে ধারণার জন্য প্রধান ফটকের বাম পাশে রয়েছে ডিসপ্লে ম্যাপ। পার্কের ভিতরে অনায়াসে বাঘ-সিংহসহ অন্যান্য প্রাণী পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার ও প্রহরা পোস্ট।

প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র
সাফারি পার্কের অভ্যন্তরেই স্থাপিত বাংলাদেশের সর্বপ্রথম প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্র। প্রায় সব ধরনের বনাঞ্চলের গাছপালা, বন্যপ্রাণীর মডেল, ম্যুরাল ও স্টাফিং করে আলো ও শব্দ প্রবাহের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চল সম্পর্কে দর্শকদের সম্যক ধারণা দেওয়া হয় এখানে। এখানে প্রায় ১০০ ধরনের বন্যপ্রাণী ও অসংখ্য গাছপালার মডেল ম্যুরাল রয়েছে।

পার্কের প্রাণী
সাফারি পার্কের প্রাণীর মধ্যে অন্যতম, বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, হাতি, নীল গাঁই, জেব্রা, জিরাফ, সাম্বার হরিণ, বাঁশ ভালুক, বন্য শুকর, চিত্রা ও মায়া হরিণ, প্যারা হরিণ, অজগর, বনমোরগ, গয়াল, বিড়াল, বানর, ভারতীয় বনরুই, সজারু, স্প্রংবক, কুদু, উল্লুক, খেঁকশিয়াল, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, বড়বেজি, সাপ, মিঠা পানির কুমির, পাখি, কাছিমসহ হাজার রকমের গাছপালা ও জীব-জন্তু।

কৃত্রিম হ্রদ
সাফারি পার্কের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর পানীয় জলের জন্য ২টি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে। কৃত্রিম হ্রদের পাশ দিয়ে হাতির পিঠে চড়া আপনাকে অন্যরকম আনন্দ দেবে।
 
মিউজিয়াম
বন্যপ্রাণী রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে ‘ডুলাহাজারা বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম’ স্থাপন করা হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম বন্যপ্রাণী মিউজিয়াম। সাফারী পার্কের প্রবেশ গেটের পাশে অবস্থিত এ মিউজিয়ামে রয়েছে অজগর সাপের চামড়া, উড়ন্ত কাঠ বিড়ালির চামড়া, হরিণের চামড়া প্রভৃতি।

শাহ ওমর শাহ (রা) এর দরগাহ   
কাকারা ইউনিয়নে অবস্থিত দরগাহটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান। এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বহু লোকের সমাগম ঘটে। কাকারার পাশে মানিকপুর ‘মহিষের দই’ এর জন্য বিখ্যাত।

গোলাপ চাষ প্রকল্প
চকরিয়ার হারবাং এলাকায় প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে এ গোলাপ বাগান। নানা প্রজাতির গোলাপ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বিক্রি করা হয় এখানে।

টেকনাফের দর্শনীয় স্থানসমূহ-

মাথিনের কূপ
টেকনাফ থানা প্রাঙ্গণে এ কূপের অবস্থান।   উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এ এলাকায় আসা পুলিশ কর্মকর্তা ধীরাজ ভট্টাচার্য ও স্থানীয় রাখাইন জমিদার ওয়াংথিনের মেয়ে মাথিনের প্রেম কাহিনী ঘিরে এ কূপের নামকরণ। এ কূপ থেকেই পানি নিতে এসে ধীরাজের সঙ্গে প্রেম হয় মাথিনের। এ কূপে তাদের প্রেমের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লেখা রয়েছে।

বৌদ্ধ ক্যাং
টেকনাফ উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ১০টি বৌদ্ধ ক্যাং রয়েছে। এর মধ্যে ন্যা থং পাহাড়ের ক্যাংয়ে রয়েছে বৃহৎ এক বৌদ্ধ মূর্তি।

নাফ নদী
মায়ানমার-বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছে নাফ নদী। টেকনাফ শহরে প্রবেশের আগে বিজিবির চেকপোস্ট পাহাড়ের চূঁড়া থেকে নাফ নদীর দেখতে অপূর্ব লাগে।

টেকনাফ স্থলবন্দর
এ বন্দর দিয়ে ‍মায়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন ও বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্য ও সৌখিন সামগ্রী আমদানি-রফতানি করা হয়।

শাহপরীর দ্বীপ
উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে সাবরাং ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম। পূর্বে এটি একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ছিল,কালক্রমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে।   কথিত রয়েছে শাহ সুজার স্ত্রী পরীবানু ও শাহ সুজার ‘শাহ’ শব্দ যুক্ত হয়ে শাহপরী হয়েছে। কারো মতে ‘শাহ ফরিদ’ আউলিয়ার নামে এ দ্বীপের নামকরণ হয়েছে। আরেক পক্ষের দাবি, অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি সারিরিদ খানের ‘হানিফা ও কয়রাপরী’ কাব্যের অন্যতম চরিত্র ‘শাহপরী’। রোখাম রাজ্যের রাণী কয়রাপরীর মেয়ে শাহপরীর নামেই এ দ্বীপের নামকরণ।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ
টেকনাফ থেকে প্রায় ৮ মাইল দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝখানে এ প্রবাল দ্বীপ অবস্থিত। জিঞ্জিরা, দক্ষিণ পাড়া, গলাছিরা ও চেরাদিয়া এই চারটি দ্বীপ নিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ গঠিত। এর প্রাচীন নাম নারিকেল জিঞ্জিরা। পরে বৃটিশ আমলে এ দ্বীপের নামকরণ হয় সেন্টমার্টিন। ভূ-তাত্ত্বিকদের মতে দ্বীপের বয়স ২০ লাখ বছর। এ দ্বীপের মূল আকর্ষণ সামুদ্রিক কাঁকড়া, কাছিম, প্রবাল, মুক্তা আর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক অ্যাকুরিয়াম। অনেকের মতে এখানে জীবন্ত পাথরও রয়েছে।

মহেশখালির দর্শণীয় স্থানসমূহ-

আদিনাথ মন্দির
এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থ স্থান। মন্দিরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৮৮ ফুট উপরে পাহাড়ের চূঁড়ায় অবস্থিত। প্রতি বছর শিবচতুর্দশী মেলায় এখানে দেশ-বিদেশের অগণিত মানুষের সমাগম হয়।

মা অষ্টভূজা
আদিনাথ শিব মন্দিরের পাশে অষ্টভূজা নামে এ মূর্তির অবস্থান।

বৌদ্ধ ক্যাং
গোরকঘাটা জেটি হয়ে বাজারে প্রবেশ করার পথে রাস্তার বাম পাশে মহেশখালী বড় ক্যাংটির অবস্থান। ক্যাংয়ে ধ্যানমগ্ন পিতলের বিরাট বৌদ্ধ মূর্তি নজরে কাড়তে বাধ্য। বড় ক্যাংয়ের ভেতরে পৃথক কয়েকটি বৌদ্ধ বিহারেও অসংখ্য পিতলের বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।

সোনাদিয়া দ্বীপ
মহেশখালীর দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সোনাদিয়া একটি ছোট্ট বালুর দ্বীপ। কক্সবাজার সদর হতে এর দূরত্ব ৪ মাইল। একে সোনালী দ্বীপও বলা হয়। শীতে এখানে হাজার হাজার অতিথি পাখি ভিড় করে। এখান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার টন শুটকি রপ্তানি করা হয়। এখানে রয়েছে অনন্য সুন্দর এক প্যারাবন।

কুতুবদিয়ার দর্শনীয় স্থানসমূহ-

কুতুবদিয়া বাতিঘর
দক্ষিণ ধুরুং এলাকায় অবস্থিত বাতিঘরের জন্য এর পরিচিতি হলেও সেই বাতিঘরটি এখন নেই। সাগরের ক্রমাগত ভাঙনে বাতিঘরটি বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে একটি বাতিঘর নির্মাণ করা হলেও তা আগেরটির মতো নয়। কুতুবদিয়াতে সাগরপাড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এটিতে বায়ুকল স্থাপন করা হয়েছে। যা থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

মালেক শাহের দরবার শরীফ
শাহ আবদুল মালেক মহিউদ্দিন আল-কুতুবী (রহ.)  নামে এক অধ্যাত্মিক সাধকের মাজার। দক্ষিণ ধুরুংয়ে অবস্থিত এ মাজারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন।

কক্সবাজারে রয়েছে পর্যটকদের জন্য প্রায় ছয় শতাধিক হোটেল। এর চার শতাধিক সমুদ্র শহরে আর বাকিগুলো অন্যান্য উপজেলার দর্শনীয় স্থানের আশ-পাশে। দিনপ্রতি ৫শ থেকে ৩০ হাজার টাকা ভাড়ায় পাওয়া যায় এসব হোটেলের কক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।