ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

গ্রীষ্মের দার্জিলিং-৮

দার্জিলিংয়ে হোটেল বিপত্তি, অতঃপর...

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
দার্জিলিংয়ে হোটেল বিপত্তি, অতঃপর... ছবি: শামীম হোসেন ও হুসাইন আজাদ

[পূর্বপ্রকাশের পর]

দার্জিলিং ঘুরে: এবার হোটেলে ওঠার পালা। বিপত্তি বাঁধলো সেখানে।

ট্যুর এজেন্সি বুক রেখেছিলো রুম। সেজন্য অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিলাম আমরা। চালক রাজু হোটেল চিনিয়ে নিয়ে গেলো। তখনও বুঝিনি আমাদের নিচে নামতে হবে। রাস্তার এক পাশে এসে বললেন এবার নিচে নামতে হবে। হোটেল নিচে।

কয়েক তলা নেমে দেখা গেলো তখনও আমরা কয়েকতলা উপরে। পাহাড়ের নিচ থেকে ধাপে ধাপে উপরে উঠেছে সব স্থাপনা। রিসিপশনে পৌঁছে ভারতীয় বাঙালি ভেবে রুম দেখালো আমাদের। খুব পছন্দ না হলেও রুম থেকে পাহাড় দেখার আনন্দে রাজি হলাম। কিন্তু যখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট বের করলাম, তখন বললো অনুমতি নেই।

ইন্টারনেটে বুকিং করা যায় কিংবা বিদেশি রাখার অনুমতি আছে এমন জায়গায় যেতে হবে। দীর্ঘ ভ্রমণের পর বেশ বিপাকে পড়লাম আমরা। অনেক বুঝিয়েও রাজি করানো গেলো না। কারণ তাদের পুলিশে রিপোর্ট করতে হয়। ভারতীয়দের দেখাতে হয় প্যান কার্ড।

ব্যাগ বোচকা কুলির কাঁধে চড়িয়ে ফের উঠলাম উপরে রাস্তায়। এরমধ্যে এজেন্সি আরেকটি হোটেল ঠিক করে দিলো। গিয়ে উঠলাম চক বাজার লামা রোডের হোটেল রিজেন্টে। রুমপ্রতি থাকা খাওয়া খরচ প্রতিদিন ২৪শ রুপি। হোটেলটি থাকা-খাওয়ার জন্য মন্দ নয়। প্রচুর বাঙালি ও বাংলাদেশি ‍আসে বুঝলাম ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে।

সুতরাং দার্জিলিংয়ে বেড়াতে গেলে আগে থেকে বিদেশিদের থাকার অনুমতি আছে এমন হোটেল ঠিক করে না গেলে এমন বিপত্তির মুখে পড়তে হতে পারে।
 
ফ্রেশ হয়ে খেয়ে-দেয়ে বের হলাম শহর ঘুরতে। টুকটাক কেনাকাটাও সারা হলো। নিশি আর সুমেহেরা এখানে খাওয়ায় একটু তৃপ্তি পেলো। ছিমছাম সুন্দর পরিবেশে পরিচ্ছন্ন খাওয়া। দার্জিলিংয়ের পশ জায়গা ম্যাল রোড। বরফি, হাইওয়ে, কাঞ্চনজঙ্ঘাসহ বহু সিনেমার শুটিং হয়েছে সেখানে।

বলা যায় বড়লোকি পাড়া। ব্র্যান্ডশপ থেকে শুরু করে চেইন রেস্তোরাঁ সবই রয়েছে এই রোডে। সেদিকটায় যাওয়ার অভিপ্রায়ে বের হলাম আমরা। কিন্তু ডলার ভাঙিয়ে বিগ বাজার গিয়ে গেলাম আটকে। আশপাশের মার্কেটগুলোও আঁকড়ে টেনে ধরলো। দার্জিলিং শীতের জায়গা। তাই চাদর, সোয়েটারসহ শীতপণ্য এখানে সস্তা। ৭০ টাকায়ও এখানে চাদর কেনা সম্ভব, আর ১০০ টাকা হলে সোয়েটার। আমরা অবশ্য যে যার পছন্দমতো শীতের প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় কিনে ফেললাম। যদিও পুরো দার্জিলিং ঘুরে আমাদের কোনোদিন দিনে সোয়েটার চাদর গায়ে চাপানোর প্রয়োজন খুব একটা পড়েনি।


 
দার্জিলিংয়ে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ফুটপাতের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। আর অন্য দোকানগুলোও রাত ৮টার মধ্যে। শীতে আরও আগে। তাই কেনাকাটার জন্য দিনকেই বাছতে হবে। পাহাড়ি এলাকায় সারাবছর মোটামুটি বৃষ্টি হয়। তাই ভালো ছাতা পাওয়া যায় এখানে। কম দামে ভালো ছাতা কেনার জায়গাও দার্জিলিং।

দার্জিলিং গিয়ে বাংলা টাকা না ভাঙানোর সিদ্ধান্তই ভালো। এতে লোকসান অনেক। প্রতি শ’য়ে লোকসান গুনতে হবে ১৫/২০ টাকা। তবে ডলারে ভালো দাম পাওয়া যায়।

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৬
এএ

**শুটিংয়ের চা বাগান, আকাশছোঁয়া পাইনের লামাহাটা

** পাহাড় থেকে পাহাড় দেখার দেলো-কালিম্পং-দুরপিনদাড়া
**পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরতম গ্রাম রিশপে
** মেঘে ভিজে লোলেগাঁও ক্যানোপিতে
** গরুবাথানের পাথুরে স্বচ্ছ পাহাড়ি ধারায়
** ফুলবাড়ি হয়ে দার্জিলিং, হ্যাপা কম নয় ২৫ রুপির ঘোষণায়
** ৭ হাজার ফুট উচ্চতার লাভা শহরে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।