ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

পর্যটকের পদচারণায় মুখর কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৯
পর্যটকের পদচারণায় মুখর কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার

সুন্দরবন থেকে ফিরে (সাতক্ষীরা): ট্রলার থেকে নামতেই এক ঝাঁক বানর ছুটে এসে আপনাকে স্বাগত জানাবে। এরপরই দেখতে পাবেন কিছু হরিণ আপনার আশপাশেই ঘোরাঘুরি করছে। এছাড়াও আছে কোটি শ্বাসমূলে ভরা গেওয়া, গরান, বাইন, পশুর, গোলপাতা, হোগলাপাতাসহ নানান প্রজাতির বৃক্ষ। রয়েছে কুমির, মদন টাকসহ হাজারও প্রাণবৈচিত্র্য।

আর এসব উপভোগ করতে শীতের শুরু থেকেই পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার। সুন্দরবন সংলগ্ন জেলা সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে এখানে।

মেতে উঠছে সুন্দরবনের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের ওয়াচ টাওয়ারে উঠে যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। কেউ বানরের সঙ্গে খেলায় মত্ত, কেউবা ছবি কিংবা সেলফি তুলেই হারিয়ে যেতে চান প্রকৃতির মাঝে।

সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন দেখার একটা বিশেষত্ব আছে। আর তা হলো এখানে বাস থেকে নেমেই স্বল্পখরচে সুন্দরবন দেখা যায়। সাতক্ষীরা শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে চুনা নদীর তীরে মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড। এপাশে বাসস্ট্যান্ড, আর ওপারে সুন্দরবন।
কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার
রাজশাহী থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা কলেজ শিক্ষক জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সুন্দরবন ভ্রমণের স্বপ্ন ছিল দীর্ঘদিনের। এবার তা পূরণ হলো। অন্যান্য জায়গার তুলনায় সাতক্ষীরা অংশের সুন্দরবন দেখা সহজ। এখানকার ব্যবস্থাপনাও ভালো।

রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সুন্দরবন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এ নিয়ে ছয় বার সুন্দরবনে এসেছি। বার বার এখানে আসতে ইচ্ছে করে।  

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের নীলডুমুর ট্রলার চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের যে পাঁচটি জেলা নিয়ে সুন্দরবন, তার মধ্যে সাতক্ষীরা দিয়েই কেবল সড়ক পথে বাস থেকে নেমেই সুন্দরবন দেখা যায়। দেশের যে কোনো এলাকা থেকে বাস যোগে শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে নামলেই সামনে পড়ে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। আর একটু ভেতরে যেতে চাইলে লোকালয় থেকে একেবারেই কাছাকাছি কলাগাছিয়া। খুব অল্প খরচে ট্রলারে যাওয়া যায় কলাগাছিয়া। শীতের শুরু থেকেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন।
সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার
এদিকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদনের নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে চুনা নদীর তীরে সুন্দরবনের কোলে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা আকাশলীনা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার। বিকেলের সময়টা ভালোই কাটে সেখানে।  

কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামনগরের বাস পাওয়া যায়। অথবা দেশের যে কোনো স্থান থেকে যে কোনো মাধ্যমে শ্যামনগরে পৌঁছে লোকাল বাস বা অন্য যে কোনো যানবাহনে চড়ে মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছুলেই রাস্তার পাশের দোকানগুলোর পেছনে তাকালেই চোখে পড়বে সুন্দরবন।

সেখানে থাকা-খাওয়া ভ্রমণের জন্য বরসা রিসোর্টসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। থাকতে পারেন ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায়ও। তবে নিরাপদে থাকা, খাওয়া ও ভ্রমণের জন্য বরসা রিসোর্ট নির্ভরযোগ্য।

ট্রলার খরচ
মুন্সিগঞ্জ থেকে সুন্দরবনের ভেতরে কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারে যেতে ট্রলার ভাড়া পড়বে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। যদিও আরেকটু গিয়ে অর্থাৎ লীলডুমুর ঘাট থেকে ট্রলার ভাড়া করেন তাহলে খরচ পড়বে এক থেকে দেড় হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।