ঢাকা: শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। রমজানে রাজধানীর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো ইফতারির পসরা নিয়ে বসে।
অনেকে আবার সাহ্রি পার্টিও করে থাকেন। এজন্য ইফতারের পাশাপাশি সাহ্রিতেও নানা খাবারের আয়োজন করে থাকে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে প্রস্তুতি জমজমাট থাকলেও সাহ্রিতে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো জমে ওঠেনি এখনো।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ভোররাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাহ্রির আয়োজনে বেশ ভালো প্রস্তুতি রয়েছে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর। তবে রমজানের প্রথম সপ্তাহে মানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক অনেক কম। রোজা যত বাড়বে, দিন দিন মানুষের ভিড় বাড়বে বলে জানান হোটেল-রেস্তোরাঁ সংশ্লিষ্টরা।
রোজার সপ্তম সাহ্রিতে রাজধানীর শাহবাগ, নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সাহ্রির জন্য বেশ প্রস্তুতি নিয়েছেন মালিকরা। বড় রেস্টুরেন্টগুলো তো আছেই, সঙ্গে এলাকায় গলির ছোট ছোট রেস্তোরাঁগুলোতেও জায়গা কম থাকায় রাস্তায় চেয়ার-টেবিল বসানো হয়েছে। সেখানে কেউ ভেতরে গিয়ে বসছেন, আবার কেউ বসেছেন বাইরে। তবে খুব বেশি ব্যস্ততা ছিল না এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয়।
হাতিরপুল ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখানকার রেস্তোঁরা মালিক-কর্মচারীদের তেমন ব্যস্ততা নেই। যেখানে ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষের বসার ব্যবস্থা আছে, সেখানে আছেন ৫ থেকে ১০ জন।
একই চিত্র দেখা যায়, এলিফ্যান্ট রোডে অবস্থিত স্টার হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে। বাইরে কোনো কোলাহল নেই। নিচতলাও পুরোটা ফাঁকা। দ্বিতীয়তলায় গিয়ে দেখা যায়, একপাশে হিসাবরক্ষক আর অল্প কিছু মানুষ সাহ্রি করছেন।
এসময় কথা হয় ব্যবসায়ী রাহাত আহমেদের সঙ্গে। রেস্টুরেন্টে এসে সাহ্রি খাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন বাসাতেই সাহ্রি করি। আজ ইচ্ছে করেই বাইরে এলাম। ভেবেছিলাম আরও অনেকেই আসবে, কিন্তু ততোটা মানুষ তো চোখে পড়লো না।
ধানমন্ডির বাসিন্দা সোহানুজ্জামান বলেন, রাতে প্রায়ই ঢাকা শহর ঘুরতে বের হই। সে হিসেবেই আজ বাইরে সাহ্রি করা। রোজা যেহেতু রাখি, সাহ্রি করার জন্য হোটেলে আসলাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শারিফুল ইসলাম বলেন, রমজানে এবারই প্রথম ঢাকায় আছি। ব্যাচেলর থাকি, তাই ঢাকার রেস্টুরেন্টগুলোতেই হয়তো এবার সাহ্রি করতে হবে।
এদিকে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা যায়, সাহ্রির জন্য বাংলা খাবারসহ চাইনিজ, জাপানিজ এবং মোগলাই খাবারের সমারোহ রয়েছে। এছাড়া আছে বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুডও। আর খাবারের পর মিষ্টান্নভোজনের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন পদের খাবার।
সাহ্রির আয়োজন নিয়ে স্টার হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সুপারভাইজার মো. ইদ্রিস আহমেদ বলেন, ১২ রোজার পর সাহ্রিতে চাপটা বেশি থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে বৃহস্পতি আর শুক্রবার রাতে। আর রাত ২টা থেকে আড়াইটার দিকে চাপটা একটু বেশি থাকে। তবে প্রথমদিক বলে এখন লোকজন কিছুটা কম। কয়েকদিন গেলে বোঝা যাবে আগের সেই অবস্থা ফিরবে কি-না।
ধানমন্ডির একাধিক রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তারাও জানালেন একই কথা। তারা বলেন, প্রথমদিকে লোকজন একটু কম হয়। কয়েকদিন গেলে বোঝা যাবে কেমন লোকজন আসে। প্রথমদিকে সবাই পরিবারের সঙ্গে বাসাতেই সাহ্রিটা করতে চায়। এরপর আস্তে আস্তে বের হয়। আর সাহ্রির আয়োজন নিয়েও আছে সবরকমের প্রস্তুতি। যে কেউ চাইলেই বন্ধু বা পরিবারে সঙ্গে বাইরে সাহ্রি করতে করতে ভালো কিছু সময় কাটাতে পারবেন।
বাংলাদেম সময়: ১০২২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০,২০২৩
এইচএমএস/এমএমজেড