কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় শুরু হবে এ ঈদ জামাত।
রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে মুসল্লিদের সংকেত দিতে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। তিনটি জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে, দুটি তিন মিনিট আগে এবং শেষটি জামাত শুরুর এক মিনিট আগে ছোঁড়া হয়।
এবারের ১৯৬তম ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ।
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জবাসীসহ সারাদেশের মুসল্লিদের ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে শোলাকিয়ায় ঈদগাহে ঈদের নামাজে শরিক হতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা পুলিশ একদিকে উচ্ছ্বসিত এবং অন্যদিকে যথেষ্ট সতর্ক। শোলাকিয়া ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে পুরো কিশোরগঞ্জ শহর জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে সিসি ক্যামেরা, ড্রোন ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবেন। সব মিলিয়ে চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখানে এমন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদগাহ মাঠে আসতে পারেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ বাংলানিউজকে জানান, ২০১৬ সালে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত জঙ্গি হামলার ঘটনায় এখানে দুজন পুলিশ সদস্যসহ (কং আনসারুল ও কং জহিরুল) তিনজন নিহত হন। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ২০১৬ সালের এ হামলার ঘটনাকে জেলা পুলিশ সব সময় মাথায় রেখেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা করে তা বাস্তাবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদগাহ মাঠে শুধুমাত্র জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে আসবেন। কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, দাহ্য পদার্থ, ছাতা, ব্যাগ বা অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে ঈদগাহ মাঠে না আনার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ মাঠে নামাজের জন্য সবাই আসবেন বলে প্রত্যাশা এ পুলিশ কর্মকর্তার।
স্থানীয়দের মতে, ১৮২৮ সালে এ মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করে আসছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, এরপর ধীরে ধীরে সেই ‘সোয়া লাখিয়া’ পরিচিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া নামে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এসআই