বগুড়া: রমজান এলেই কদর বাড়ে বগুড়ার ঘোলের। আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যখ্যাত বগুড়ার বিখ্যাত দই থেকে এই ‘ঘোল’ বানানো হয়।
রোজাদারদের ইফতারে প্রাণ জুড়ায় সুস্বাদু ঘোল। ইদানিং আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পানীয়।
রমজান মাসের আর সব দিনের মতো বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরেও বগুড়া শহরের বিভিন্ন দইয়ের দোকানে দেখা গেল ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বেশিরভাগই এসেছিলেন ঘোল কিনতে।
একে তো ঘোল সুস্বাদু পানীয়, তার ওপর চলতি চৈত্র মাসে রমজান শুরু হওয়ায় এর চাহিদা আরও বেড়েছে।
দিনের গরম রোজাদারদের ক্লান্ত করে তৃষ্ণার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। আর দিনশেষে তৃষ্ণার্ত রোজাদারের প্রাণ জুড়াতে তৃপ্তি এনে দেয় ঘোল।
তাই সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার তালিকায় ঘোল রাখার চেষ্টা করেন রোজাদাররা।
জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঘোষপাড়ায় প্রায় ২৫০ বছর আগে দই বানানো শুরু করেন কয়েকটি ঘোষ পরিবার। ওই সময়ে পাতলা দই হতো, যা চাহিদা অনুযায়ী ছোট-মাঝারি-বড় পাতিলে ভরে বিক্রি করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বর্তমানে পাতলা দইয়ের চাহিদা নেই বললেই চলে। সেখানে স্থান করে নিয়েছে ঘোল।
মিলন ঘোষ, আহসান ভূইয়া নামে দুই বিক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, রমজান এলেই প্রায় মিষ্টান্নসামগ্রীর দোকানে ঘোল বিক্রি হয়। বছরের অন্য সময় কমবেশি বিক্রি হলেও রমজান মাসে ঘোলের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। এসময় দোকানগুলোয় বোতলজাত ঘোল বিক্রি হয়। এছাড়া গরমের কয়েক মাস পাতিলে ভরে গ্লাসে করে গ্রাম, হাট-বাজারে ফেরি করে বিক্রি করা হয়। প্রকারভেদে প্রতি গ্লাস ঘোল এখন ১০-২০ টাকা।
আবু মুসা, হান্নান আলী, নাসরিন বেগম নামে কয়েকজন ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, ঘোল ইফতারে এনে দেয় বাড়তি মাত্রা। দুগ্ধজাত এ পানীয় অত্যন্ত সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। বছরের প্রায় ১২ মাসই জেলার বিভিন্ন দই ও মিষ্টির দোকানে কমবেশি ঘোল পাওয়া যায়।
গেল বছরের তুলনায় এবার ঘোলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান তারা।
শহরের মহরম আলী দই ঘরের বিক্রেতা মোহাম্মেদ নিয়ামুল ওয়াকিল বাংলানিউজকে জানান, বগুড়ায় বাহারি ইফতার আইটেমের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ঘোল। গরমে সারাদিন শরীর থেকে পানি ঝরতে থাকে। এতে শরীরে পানি ও লবণের স্বল্পতা দেখা দেয়। তাই ইফতারে অন্য আইটেমের সঙ্গে ঘোল অনেক উপকারী। রমজানজুড়েই ঘোল বিক্রি করি।
বগুড়ায় বিভিন্ন নামকরা দইয়ের দোকানগুলোতে প্রকারভেদে বোতলজাত প্রতি লিটার ঘোল ১০০-১৩০ টাকা, আধা লিটার ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বছরের সব সময়ই ঘোলের দাম প্রায় একই থাকে।
রজমান মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও ঘোলের দাম বাড়েনি মন্তব্য ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
কেইউএ/এসএএইচ