বার্ধক্য বা জটিল কোনো রোগের কারণে যার রোজা রাখার সামর্থ্য একেবারেই নেই এবং পরে কাজা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই- এমন ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে সদকায়ে ফিতর (অর্থাৎ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য) সমপরিমাণ খাদ্যশষ্য দেওয়া কিংবা দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো অথবা এর মূল্য দেয়াকে ফিদইয়া বা রোজার ক্ষতিপূরণ বলে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে।
হজরত ইকরামা (রহ.) বলেন, ‘আমার মা প্রচণ্ড তৃষ্ণা-রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং রোজা রাখতে সক্ষম ছিলেন না। তার সম্পর্কে আমি তাউস (রহ.) কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘প্রতিদিনের পরিবর্তে মিসকিনকে এক মুদ (আধুনিক হিসাবে ১ কেজি ৬৩৬ গ্রাম) পরিমাণ গম প্রদান করবে। ’ -আবদুর রাজ্জাক হাদিস: ৭৫৮১
মাসয়ালা : উপরোল্লেখিত ব্যক্তি যদি কখনো সুস্থ হয়ে যায় তখন সবগুলো রোজার কাজা আদায় করতে হবেচ। ফিদইয়াস্বরূপ যা কিছু দান করা হয়েছে সেগুলোর জন্য আলাদা সাওয়াবপ্রাপ্ত হবে। -রদ্দুল মুহতার : ৩/৪৭৮
মাসয়ালা : একটি রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। -আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৬
মাসয়ালা : রমজানের পূর্বে ফিদইয়া আদায় করলে তা গ্রাহ্য হবে না। যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। -আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪৩৫; আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭
মাসয়ালা : ওজরবশত ছুটে যাওয়া রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে মৃত্যুর আগে ফিদইয়া দেয়ার অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। অসিয়ত না করে গেলে ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে এমনিতেই ফিদইয়া আদায় করে দেয় তবে আশা করা যায়, আল্লাহতায়ালা তা কবুল করবেন। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৪-৪২৫
মাসয়ালা : এক রোজার ফিদইয়া একজন মিসকিনকে দেয়াই উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দিলেও ফিদইয়া আদায় হবে। তদ্রুপ একাধিক ফিদইয়া এক মিসকিনকেও দেয়া জায়েজ। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৭
মাসয়ালা : ছোট বাচ্চা বা নাবালেগকে খাওয়ালে ফিদইয়া আদায় হবে না। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ২/২০
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘন্টা, জুন ২৬, ২০১৫
এমএ