ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

রোজা অবস্থায় বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষার বিধান

কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৫
রোজা অবস্থায় বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষার বিধান

এন্ডোসকপি
পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগ পরীক্ষার জন্য চিকন লম্বা একটি পাইপ রোগীর মুখ দিয়ে পাকস্থলীতে প্রবেশ করানো হয়। যার মাথায় একটি বাল্ব থাকে।

এই পাইপের সঙ্গে কম্পিউটার মনিটরের সংযোগ থাকে। এর সাহায্যে চিকিৎসকরা রোগীর পেটের অবস্থা ও রোগ নির্ণয় করে থাকেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটাকে এন্ডোসকপি বলা হয়। এন্ডোসকপির পাইপের সঙ্গে কোনো প্রকার মেডিসিন লাগানো থাকে না, তাই স্বাভাবিক অবস্থায় এর কারণে রোজা ভঙ্গ হবে না।

এমনিভাবে ফতোয়ায়ে আলমগীরীতে লেখা আছে, ‘যদি কেউ কোনো গোশতের টুকরা সুতা দ্বারা বেঁধে গিলে ফেলে অতঃপর টান দিয়ে বের করে নিয়ে আসে তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে না। ’ -ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী: ২/২০৪

তবে এন্ডোসকটির সময় রোগীর মুখের ভিতর কিংবা পেটে পানি বা কোনো ঔষধ ব্যবহার করা হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।

এনজিওগ্রাম
হার্ট ব্লক হয়ে গেলে উরুর গোড়া দিয়ে কেটে বিশেষ রগের ভিতর দিয়ে হার্ট পর্যন্ত যে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয় তার নাম এনজিওগ্রাম। এ যন্ত্রটিতে যদি কোনো ধরনের ঔষধ লাগানো থাকে তারপরেও রোজা নষ্ট হবে না। -ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা

নাইট্রোগ্লিসারিন
এরোসল জাতীয় ঔষধ, যা হার্টের জন্য দুই-তিন ফোঁটা জিহ্বার নীচে দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখতে গয়। ঔষধটি শিরার মাধ্যমে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এমনটি হলে রোজা নষ্ট হবে না।

কিন্তু ঔষধের কিছু অংশ যদি গলায় প্রবেশ করে বা গলায় ঔষধের স্বাদ অনুভব হয় তবে রোজা ভেঙ্গে যাবে। -জাদিদ ফিকহি মাসায়েল

লেপারোস্কপি
একটি টিউব দ্বারা পেট ছিদ্র করে পেটের ভিতরের কোনো অংশ পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে বের করে নিয়ে আসা হয়। এতে যদি ঔষধ লাগানো থাকে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে অন্যথায় রোজা ঠিক থাকবে। -আল মাকালাতুল ফিকহিয়া

রক্ত দেয়া
রোজা অবস্থায় ব্লাড টেস্টের জন্য বা কোনো রুগীর জন্য শরীর থেকে রক্ত দিলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে রক্ত দেওয়ার কারণে যদি এমন দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা থাকে যে, সে রোজা রাখতে পারবে না, তাহলে মাকরুহ হবে। -ফাতহুল ক্বদির: ২/৩৪৬, আহসানুল ফতোয়া: ৪/৪২৫, জাওয়াহিরুল ফিক্বাহ: ১/৩৭৯, মাসায়েলে রোজা: ৭০

সিস্টোসকপি
প্রসাবের রাস্তা দিয়ে ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে যে পরীক্ষা করা হয় এর দ্বারা রোজা ভাঙ্গবে না। -হেদায়া

প্রক্টোসকপি
পাইলস, অর্শ ও ফিস্টুলা ইত্যাদি রোগের পরীক্ষাকে প্রক্টোসকপি বলে। মলদ্বার দিয়ে নল প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়। রোগী যাতে ব্যথা না পায় সে জন্য নলের মধ্যে গ্লিসারিন জাতীয় কোনো পিচ্ছল বস্তু ব্যবহার করা হয়। নলটি পুরোপুরী ভিতরে প্রবেশ করে না। চিকিৎসকদের মতানুসারে ওই পিচ্ছিল বস্তুটি নলের সঙ্গে মিশে থাকে এবং নলের সঙ্গেই বেরিয়ে আসে, ভেতরে থাকে না। আর থাকলেও তা পরবর্তীতে বেরিয়ে আসে। যদিও শরীর তা চোষে না কিন্তু ওই বস্তুটি ভিজা হওয়ার কারণে রোজা ভেঙ্গে যাবে। -ফতোয়ায়ে শামী: ২/১০৮, ফাতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ: ৬/৪১১

আলট্রাসনোগ্রাম
আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় যে ঔষধ বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয় সবই চামড়ার ওপরে থাকে, তাই আলট্রাসনোগ্রাম করলে রোজা ভাঙ্গবে না। -হেদায়া

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘন্টা, জুন ২৮, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।