কোরআন, হাদিস ও ইজমার আলোকে জাকাত ইসলামের অন্যতম অপরিহার্য ফরজ দায়িত্ব বলে প্রমাণিত। যার অস্বীকারকারী বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্যকারী কাফের বলে গণ্য; আর অনাদায়কারী ফাসেক এবং কঠিন শাস্তির যোগ্য।
জাকাত প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘আর নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। আর তোমরা নিজদের জন্য মঙ্গলজনক যা কিছু অগ্রে পাঠাবে তোমরা তা আল্লাহর কাছে পাবে প্রতিদান হিসেবে উৎকৃষ্টতর ও মহত্তর রূপে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ -সূরা মুজ্জাম্মিল: ২০
পবিত্র কোরআনে কারিমের আরেক জায়গায় আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা যে সুদ দিয়ে থাক, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলত আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। আর তোমরা যে জাকাত দিয়ে থাক আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে (তাই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই বহুগুণ সম্পদ প্রাপ্ত। ’ -সূরা আর রূম: ৩৯
কোরআনে কারিমের সূরা বাকারার ৪৩, ৮৩, ১১০নং আয়াত, সূরা আন নুরের ৫৬নং আয়াত এবং সূরা আল মুজাদালার ১৩ নং আয়াত ছাড়াও পবিত্র কোরআনে কারিমে জাকাত ফরজ হওয়ার বিধান সম্পর্কে অনেক আয়াত রয়েছে।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর অসংখ্য হাদিসে জাকাতের অত্যাবশ্যকীয়তা সম্পর্কে বহু বিবরণও এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি, যথা- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। নামাজ আদায় করা, জাকাত প্রদান করা, রমজানের রোজা পালন করা ও হজ আদায় করা। এ কথা শুনে এক ব্যক্তি বললেন, হজ তারপর কি রমজানের রোজা? তিনি বললেন, না বরং প্রথমে রমজানের রোজা তারপর হজ। এ ধারাবাহিকতায় আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি। ’
সুতরাং বোঝা গেল, জাকাত ইসলামের একটি রুকন ও মৌলিক ভিত্তিগুলোর একটি। আর কোরআনে কারিমের বহু জায়গায় নামাজের পাশাপাশি জাকাতের বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে।
ইজমায়ে উম্মত তথা সকল মুসলিম স্কলাররা অকাট্যভাবে একমত যে, জাকাত একটি ফরজ বিধান। সুতরাং জাকাত ফরজ জেনেও যদি কোনো ব্যক্তি তা অস্বীকার করে, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। আর যে জাকাত প্রদানে কৃপণতা করবে বা পরিমানের চেয়ে কম দেবে, সে লাঞ্ছনা ও কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘন্টা, জুলাই ০২, ২০১৫
এমএ/