ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

স্মৃতিচারণ

আব্বা বলতেন রোজা রাখলে পড়াশুনা ভালো হয়: রওশন এরশাদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৬
আব্বা বলতেন রোজা রাখলে পড়াশুনা ভালো হয়: রওশন এরশাদ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি

ময়মনসিংহ: আত্মশুদ্ধির মাস রমজান নিয়ে একেকজনের শৈশব স্মৃতি একেক রকম। সাফল্যের সোনালি সিঁড়ি বেয়ে যারা নিজেকে কর্মেক্ষেত্রে আলোকিত ও অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তাদের প্রথম রোজার স্মৃতিচারণ জানতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

আজকের আয়োজনে মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ এমপি। ব্রহ্মপুত্র তীরের গ্রাম সুতিয়াখালীর মেয়ে বেগম রওশন এরশাদ ময়মনসিংহের কন্যা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাবার চাকরির সুবাধে সাবেক এ ফার্স্ট লেডির বেড়ে উঠা ব্রাক্ষণবাড়িয়ায়। জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ নিজের প্রথম রোজার স্মৃতিচারণ করেছেন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান এর সঙ্গে।

বাবা সরকারি কর্মকর্তা প্রয়াত উমেদ আলীর আদুরে সন্তান ছিলেন রওশন এরশাদ। মাত্র ৮ বছর বয়সেই প্রথম রোজা রেখেছিলেন তিনি। সেই বয়সে মোট কয়টি রোজা রেখেছিলেন সঠিক সংখ্যা মনে নেই। তবে বেশ কয়েকটি রোজা রেখেছিলেন এটা মনে আছে।


স্মৃতিচারণ করে বেগম রওশন এরশাদ বলেন, ‘রোজা রাখার জন্য পরিবারের সবার সঙ্গে ওঠে সেহেরি খেতাম। প্রথম দিকে কয়েকটি রোজা রেখেছিলাম। ওই সময় মা বলতেন বাচ্চাদের দুপুর পর্যন্ত রোজা রাখলেই চলে। তবুও রোজা ভাঙতে চাইতাম না। পরে মা’র অভয়ে রোজা ভাঙতাম। ’

তিনি বলেন, ‘মা-বাবা দু’জনেই বলতেন মুসলমান হিসেবে রোজা রাখতে হয়। আব্বা বলতেন রোজা রাখলে পড়াশুনা ভালো হয়। আমার থেকে চার বছরের বড় আমার বোনও আমার মতোই কয়েকটি রোজা রাখতেন। ’

প্রথম রোজার ইফতারি সম্পর্কে নিজের স্মৃতিকথা তুলে ধরে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ‘পরিবারের সবাই মিলে ইফতারি নিয়ে গোল হয়ে বসে থাকতাম। বাবাই বলে দিতেন বিসমিল্লাহ বলে পানি-খেজুর খেতে। মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে মনের আনন্দে ইফতারি সারতাম। ’

সেই সময়ে রওশন এরশাদের ইফতারির তালিকায় থাকতো মুড়ি, পেয়াজু, খেজুর আর বাড়িতে মা’র হাতে রান্না করা সুস্বাদু পায়েস। তিনি পায়েস খুবই পছন্দ করতেন। এ কারণে তাদের ইফতারে পায়েস ছিল অনেকটাই ‘কমন’ আইটেম, বলতে বলতে স্মৃতিকাতর হয়ে উঠেন রওশন।

বাংলানিউজের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপচারিতায় যেন শৈশবের স্মৃতিতে হারিয়ে যান রওশন। সেই সময়ে ঈদের কেনাকাটা, চাঁদ রাতে নিজেদের প্রস্তুতির কথাও বলেন অকপটে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ. এম. এরশাদ পত্নী বলেন, ‘আকাশে ঈদের চাঁদ দেখে ভাই-বোনরা মিলে অনেক আনন্দ করতাম। ঈদের জন্য কেনা জামা-কাপড়, জুতা, চুড়িসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রাতে সাজিয়ে রাখতাম। ভোর হতে না হতেই ঘুম থেকে উঠে যেতাম। সাত সকালেই সাজ-গোজ সেরে ফেলতাম। ’

রওশন বলতে থাকেন, ‘রাত জেগে মা রান্না-বান্না করতো। সকালে ঘুম থেকে ওঠেই পায়েসের গন্ধ পেতাম। সেই সোনালী দিনগুলো আমার মনের হীরক দ্যুতিতে আজো জ্বলজ্বল করছে। ’

রওশন এরশাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘রমজান মাসে মানুষ আত্মিকভাবে পরিশুদ্ধ হয়। তাই আল্লাহর নৈকট্য লাভে সব ধরণের গুনাহের কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখে। এ মাসে মানুষের আচার-আচরণেও পরিবর্তন আসে। সামাজিক পরিমন্ডলেও ছড়িয়ে পড়ে শান্তি ও সম্প্রীতির সুবাতাস। এ বাতাস বইতে থাকুক নিরন্তর। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৬
এমএএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।