আজ ষষ্ঠ তারাবি অনুষ্ঠিত হবে। আজকের তারাবিতে পবিত্র কোরআনে কারিমের তেলাওয়াতকৃত অংশের উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়বস্তু হচ্ছে, সমকামিতার নিন্দা।
সমকামিতা প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের আরও অনেক স্থানে আলোচনা করা হয়েছে। যেমন, ‘এবং যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লুতের নিকট আসলো, তখন তাদের আগমনে সে বিষন্ন হলো। নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করলো। বলল, এটা একটা কঠিন দিন। তার সম্প্রদায় উদ্ভ্রান্ত হয়ে তার নিকট ছুটে আসল। পূর্ব থেকেই তারা কুকর্মে লিপ্ত ছিল। সে বলল, হে আমার সম্প্রাদয়! আমার মেয়েরা আছে। তারা তোমাদের জন্য পবিত্র। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর। আমার অতিথিদের প্রতি অন্যায় আচরণ করে আমাকে হেয় করো না। তোমাদের মধ্যে কি কোনো ভালো মানুষ নেই? তারা বলল, তুমি তো জানো, তোমার মেয়েদের প্রতি আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা কি চাই, তা তো তুমি ভালো করেই জানো। সে বলল, তোমাদের ওপর যদি আমার শক্তি থাকত অথবা, কোনো শক্তিশালী আশ্রয় আমি নিতে পারতাম! তারা বলল, হে লুত! আমরা তোমার প্রতিপালক কর্তৃক প্রেরিত ফেরেশতা। তারা কখনোই তোমার নিকট পৌঁছতে পারবে না। সুতরাং তুমি রাতের কোনো এক সময়ে তোমার স্ত্রী ব্যতীত তোমার অন্যান্য পরিবারবর্গসহ বের হয়ে পড়। তোমাদের কেউ যেন পেছন দিকে না তাকায়। তাদের (তোমার সম্প্রদায়ের) যা হবে তারও (তোমার স্ত্রীরও) তা-ই হবে। তাদের (শাস্তির ) জন্য নির্ধারিত সময় সকাল। সকাল কি নিকবর্তী নয়? অতঃপর যখন আমার আদেশ আসল, তখন আমি জনপদ উল্টে দিলাম। তাদের ওপর ক্রমাগত পাথরের কঙ্কর নিক্ষেপ করলাম। ’ –সূরা হুদ: ৭৮-৮২
সৃষ্টি ও প্রকৃতির অনুকূল স্বভাবের অপর নাম ইসলাম। সৃষ্টির স্বাভাবিক গতি বিরোধী, প্রকৃতির প্রতিকূল কোনো আচরণ ইসলাম পছন্দ করে না। পুরুষ দ্বারা পুরুষের কামনা তৃপ্ত করা বা নারীর দ্বারা নারীর কামনা তৃপ্ত করা সৃষ্টি বিরোধী রুচিহীন নোংরা কাজ। বিকৃত রুচির অমানুষদের দ্বারা এ ঘৃণ্য কাজ সম্ভব। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম এমন বিকৃত যৌনাচারে নিমজ্জিত হয়েছিল হজরত লুত (আ.)-এর সম্প্রাদয় সাদুমবাসীরা। তাদের সংশোধনের জন্য হজরত লুত (আ.) অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তারা তার নসিহত কোনোভাবেই গ্রহণ করেনি। শেষ পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা তাদের এলাকা উল্টে দিয়ে, তাদের ওপর মুষলধারে পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করে তাদের ধ্বংস করে দেন।
বর্তমান অনেক দেশের পার্লামেন্ট ও আদালত ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে চির অভিশপ্ত সমকামী বিবাহকে আইনগতভাবে বৈধতা দিয়েছে। এটা কাম্য নয়। আমরা মনে করি, ওই সব দেশের সরকার ও আদালতের দায়িত্ব ছিল জনসাধারণকে সংশোধন করা, তাদের সচেতন করা, তাদের রুচিবোধ উন্নত করার প্রয়াস চালানো। কিন্তু তারা ওই দায়িত্ব পালন না করে- উল্টো অন্যায় আবদারকে, বিকৃতিকে আইনগত সুবিধা দিয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সম্মান করতে যেয়ে মনুষত্বকে, মানব মর্যাদাকে, সুস্থ্য রুচিকে, শালীনতাবোধকে অসম্মান করেছে।
বাংলাদেশেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যসেবার কিংবা স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টির নামে সমকামী পুরুষ ও সমকামী নারীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছে। তাদের পক্ষে নানাবিধ প্রচারণা চালাচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকার, গণমাধ্যম ও জনসাধারণের সতর্ক দৃষ্টি প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৬
এমএইউ/