চট্টগ্রাম: পবিত্র রমজান মাসে বাংলানিউজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সমাজে যারা প্রতিষ্ঠিত তাদের শৈশব, কৈশোর ও বাল্যকালের রোজার স্মৃতি জানার চেষ্টা করেছে। আজকের আয়োজনে কথা বলেছেন চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান আবদুল্লাহ আল নোমান।
সেহেরি খেতে উৎসুক ছিলাম
মধ্যরাতে হঠাৎ যখন ঘরে বাতি জ্বলে উঠতো এবং দেখতাম সবাই সেহেরি খাচ্ছে আমিও উৎসুক হয়ে উঠতাম। সেহেরিও খেতাম। কিন্তু বাসা থেকে রোজা রাখতে দিত না। বলতো, সেহেরি খেতে পার, তবে রোজা রাখতে পারবে না। আবার কখনো কখনো বলতো সেহেরি খেলেও সকাল দুপুরে খেতে হবে। আমাদের তা-ই মানতে হতো।
দিনে তিনটা রোজা রাখতাম
একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বড় পরিবার ছিল। তাই সবার সঙ্গে সেহেরি খাওয়ার উৎসাহ ছিল। দুধ-কলা দিয়ে আনন্দের সঙ্গে সেহেরি খেতাম। কিন্তু রোজা রাখতে মানা করতো। বলতো, তোমরা এখনো ছোট, দিনে তিনটা রোজা রাখতে পারবে। রোজাটা বাড়ির একপাশে রেখে আস, তারপর খাবার খেয়ে আবার নিয়ে আসবে। এভাবে অনেক সময় রোজা রেখেছি।
তিনি বলেন, তখন আমরা বড়দের কথা বিশ্বাস করেছি। কিন্তু এখন আমার ৭ বছরের নাতিকে এসব বললে সে হাসে। এরই মধ্যে সে একটি রোজা রেখেছে।
পঞ্চম শ্রেণি থেকে রোজা রাখা শুরু
পঞ্চম বা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় রোজা রাখা শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমার মা অত্যন্ত পরহেজগার ছিলেন। রোজা রাখার জন্য তিনি শাসন করতেন।
খাবার দাবারে বিশেষ কোনো আগ্রহ না থাকায় রোজা রাখতে সমস্যা হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, খাবারে আমার তেমন কোনো আগ্রহ নেই। তাই রোজা রাখতে অসুবিধে হয়নি।
রোজার অপেক্ষায় থাকতাম
রোজার অপেক্ষায় থাকতেন জানিয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কখন রোজা আসবে সেই অপেক্ষায় থাকতাম। কারণ রোজার পরেই ঈদ। আর ঈদ মানে নতুন নতুন জামা-কাপড়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, রোজার অপেক্ষায় থাকতাম ঠিকই। কিন্তু মনে মনে বলতাম রোজা যেন দ্রুত শেষ হয়। তাড়াতাড়ি ঈদ আসুক।
‘ঈদ মানেই নতুন শার্ট, নতুন প্যান্ট, নতুন জুতা, নতুন টুপি; এক কথায় সব কিছুই নতুন। তাই ঈদের প্রতি আগ্রহ থাকতো বেশি। ’
উদ্দেশ্য ঈদ সালামি
ঈদের পাওয়া সালামির টাকায় বেড়াতে যেতেন জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ঈদের জন্য অপেক্ষার থাকার বিশেষ কারণ ছিল। ঈদে মুরব্বিদের সালাম করতাম। আর সালাম করলেই পাঁচ টাকার চকচকে নোট পেতাম।
ঈদের দিন রিকশা নিয়ে চাচার বাসায় চলে যেতাম। সেখানে গেলে চাচী রিকশা ভাড়া দিয়ে দিত। সালাম করলে পাঁচ টাকার একটা নোট পেতাম। ঈদে মুরব্বিদের সালাম করতাম টাকা পাওয়ার উদ্দেশ্যে। ঈদের পাওয়া টাকা দিয়ে উৎসব করতাম। ঈদের দিন সবাই মিলে বেড়াতে যেতাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৬
এমইউ/টিসি/এমএইউ/